পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলের সেই জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এলাকায় এখনো অবাধ বিচরণ বন্য হাতিদের। এই সব হাতি মাঝে মধ্যে ওঠে পড়ে এখানকার রেল লাইনের ওপর। এতে করে মাঝেমধ্যে ঘটে দুর্ঘটনা। ট্রেনের ধাক্কায় মারা যায় হাতি। ফলে মাঝেমধ্যে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রেন লাইন ও ইঞ্জিন।
তবে, এবার হাতির পাল যাতে রেল লাইনের ওপর ওঠে না পড়ে সে জন্য রেল কর্তৃপক্ষ এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে। ভারতীয় রেলের উত্তর পূর্ব শাখা এই লক্ষ্যে রেলওয়ে ট্রাকে লাগাতে চলেছে মৌমাছি গুঞ্জনের শব্দযুক্ত একটি যন্ত্র। এই যন্ত্র লাগালে হাতি আর ওই শব্দ শুনে রেল লাইন পার হবে না বলে মনে করছে রেল কর্মকর্তারা।
মাত্র ২ হাজার টাকা খরচের বিনিময়ে এই মৌমাছির গুঞ্জনের ডিভাইস করা যাচ্ছে। ফলে একেবারে সামান্য খরচে এত বড় ফল রেলের কাছে এখন হাতে স্বর্গ পাওয়ার মতো।
রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাইন কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন, ২০১৪ থেকে ২০১৭ মধ্যে লাইন পারাপারের সময় ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেছে ৩৫টি হাতি। গত এপ্রিল মাসে হাওড়া-মুম্বই মেলের ধাক্কায় ওড়িশার ঝাড়সুগুদা শাখার তেলিদিহিতে চারটি হাতি মারা যায়। বারবার এই হাতি মৃত্যুতে রেল-রাজ্য তরজা লেগেই রয়েছে। বারবার নানা পদক্ষেপ করেও সুফল তেমন পাওয়া যায়নি। এই দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। এবার নতুন ভাবনা রেলের ঘরে।
ছোট মৌমাছির হুলকে অঙ্কুশের ফলার চেয়েও বেশি ভয় পায় হাতি। এই বদ্ধ ধারণা থেকেই এবার রেলের নবতম পরিকল্পনা। হাতি তাড়াতে এবার মৌমাছির গুঞ্জনকে হাতিয়ার করা। আর এই কায়দা নিতে হাতির করিডরগুলিতে এমন এক ডিভাইস লাগানো হচ্ছে যাতে ভোঁ ভোঁ শব্দ হবে মৌমাছির গুঞ্জনের মতো। যা ৬০০ মিটার দূর থেকে শুনতে পাবে হাতির পাল। শুনেই আর সেমুখো হবে না তারা। যা গাড়ি আসার আগেই চালানো হবে কিছুক্ষণ যাবৎ। এই মোক্ষম দাওয়াই কাজে আসবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এক একটির দাম মাত্র দু’হাজার টাকা। ফলে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ রেলের যে জায়গাতে হাতি লাইন পারাপার করে সেখানে ব্যবহার করা হবে।