দ্বিতীয়বারের মতো ঐতিহাসিক বৈঠকে বসছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আজ বুধবার ভিয়েতনামের হ্যানয় শহরে তাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার ট্রেনে পৌঁছান কিম জং উন। তার পরই রাতে বিমানযোগে পৌঁছান ট্রাম্প। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার কিম-ট্রাম্পের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকে কোরীয় উপত্যকাকে পরমাণু মুক্ত করার ব্যাপারে আলোচনা করা হবে। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার অবসান ঘটিয়ে বাণিজ্যের প্রসারের ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে পারেন কিম।
বুধবার সন্ধ্যায় ট্রাম্প ও কিম সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য একান্তে বৈঠকের পর নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন, যেখানে দুজন করে অতিথি ও দোভাষী থাকবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন হোয়াইট হাউজ মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স। বৃহস্পতিবার উভয় নেতা দ্বিতীয়বার মিলিত হবেন।
গত বছর সিঙ্গাপুরে উভয় নেতার মধ্যে অস্পষ্ট সমঝোতা হলেও এবার সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাইছে উভয় পক্ষই। যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের সমালোচকরা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে চুক্তি তাদের পারমাণবিক উচ্চাভিলাষ ঠেকাতে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ পারমাণবিক অস্ত্র পরিত্যাগ করার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।
অন্যদিকে উত্তর কোরিয়ার দৃষ্টি থাকবে কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ছাড় আদায় করা যায়। বিশেষ করে দেশটির ওপর সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং ১৯৫০-৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করার দিকে দৃষ্টি থাকবে পিয়ংইয়ংয়ের।
ট্রাম্প ও কিমের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও উভয় নেতা পৃথকভাবে ভিয়েতনামের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন এবং পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করবেন। ভিয়েতনামের উদ্দেশে যাত্রার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা অসাধারণ এক সম্মেলন হতে যাচ্ছে।’
এদিকে কিম হ্যানয়ের মেলিয়া হোটেলে অবস্থান করছেন, যার প্রবেশপথ ভারী সাঁজোয়া যানসহ কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছে ভিয়েতনামের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হোটেলে পৌঁছার কয়েক ঘণ্টা পর প্রথম কর্মসূচি হিসেবে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাস পরিদর্শন করেন কিম।
পিয়ংইয়ং থেকে বিশেষ ট্রেনে করে চীন হয়ে ভিয়েতনামের সীমান্তবর্তী শহর ডং ড্যাংয়ে অবতরণ করেন কিম। ভিয়েতনামের কর্মকর্তারা তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দিয়ে অভ্যর্থনা জানান এবং গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এ সময় উভয় দেশের পতাকাও উত্তোলন করা হয়।
উত্তর কোরীয় নেতার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন তার বোন কিম ইয়ু জং, যিনি সাম্প্রতিক সময়ে কিমের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগীর ভূমিকা পালন করছেন।