রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে এমন অভিযোগে দেশটির সঙ্গে মাধ্যমিক পর্যায়ের পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে পুরো ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। ইউরোপ মনে করছে এমন সিদ্ধান্ত তাদের জন্য অনিরাপদ। তবে ইইউ তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে।
শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ ঘোষণা দিয়েছেন।পম্পেও বলেন, কোনো ধরনের অনুশোচনা ছাড়াই রাশিয়া ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস চুক্তি ভঙ্গ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ চুক্তিটি রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র করেছিল। কিন্তু এটার গুরুত্বের প্রভাব ইউরোপিয়ানদের নিরাপত্তায় প্রভাব পড়বে।
ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) নামে মাইলফলক চুক্তিটি ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা মিখাইল গর্ভাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান।
ওই চুক্তিটির মাধ্যমে ৫০০ থেকে সাড়ে ৫ হাজার কিলোমিটারের মধ্যে মাঝারি দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ নিষিদ্ধ করা হয়।
এদিকে গত বছরের অক্টোবরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া চুক্তিটির শর্ত লঙ্ঘন করছে দাবি করে তা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ১৯৮৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) নামের দ্বিপাক্ষিক এই মাইলফলক চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা মিখাইল গর্ভাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান।
৩০ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তিটি ধরে রাখছে। কিন্ত রাশিয়া মিথ্যা বর্ণনা দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে যাচ্ছে। শুক্রবার ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা পৃথিবীর একমাত্র দেশ না, যে একতরফা চুক্তি মানতে বাধ্য বা অন্য কেউ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করেছে যেটি ৩১০ থেকে ৩ হাজার ১০০ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে, যা ইউরোপের জন্য হুমকি। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তি থেকে বেরিয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে ন্যাটো বলছে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির সারিতে রয়েছে এবং সম্পূর্ণ সমর্থন করছে। তবে রাশিয়া ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, চুক্তি ভঙ্গ করে রাশিয়া নতুন মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নভেটর ৯এম৭২৯ তৈরি করেছে। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছে তা এসএসসি-৮ নামে পরিচিত। এ ঘটনায় খুব কম সময়ের মধ্যে ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোতে পারমাণবিক ধর্মঘট চালু হতে পারে।
তাছাড়া ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট থাকার সময় বারাক ওবামা আইএনএফ লঙ্ঘন করে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার অভিযোগ এনেছিলেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে। তবে ইউরোপীয় নেতাদের চাপের কারণে তিনি ওই চুক্তি প্রত্যাহার করা থেকে সরে যান।