আবাহনীর বিপক্ষে মাঠের ক্রিকেটে অশোভন আচরণ করায় মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও ৩ ম্যাচের বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন ম্যাচ রেফারি। সাকিবও সে শাস্তি মেনে নেওয়ায় এ ঘটনায় আর কোনো শুনানি হবে না।
আজ দুপুরের পর ম্যাচ রেফারি মোরশেদুল আলমের পাঠানো শাস্তির নোটিশ হাতে পান ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা সাকিব। চিঠিতে সাকিবের বিরুদ্ধে লেভেল-৩ পর্যায়ের আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ এনে তাঁকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা ও ৩ ম্যাচের বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন ম্যাচ রেফারি।
সাকিব অপরাধ স্বীকার করে নিয়ে চিঠিতে স্বাক্ষর করে দেওয়ায় এই শাস্তিই বহাল থাকবে। শাস্তির ব্যাপারে আপত্তি থাকলে শুনানিতে ডাকা হতো তাঁকে।
নিয়ম অনুযায়ী লেভেল–৩ পর্যায়ের অসদাচরণ প্রথমবার করলে শাস্তির বিধান আছে
কমপক্ষে ১ ম্যাচ থেকে সর্বোচ্চ ২ ম্যাচের বহিষ্কারাদেশ ও কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা। একই ম্যাচে লেভেল-৩ পর্যায়ের অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে সেটির শাস্তি ২ থেকে ৫ ম্যাচের বহিষ্কারাদেশ ও জরিমানা কমপক্ষে ২৫ হাজার টাকা। দুই অপরাধের জন্যই ন্যূনতম ম্যাচে বহিষ্কার করা হয়েছে সাকিবকে। প্রথম অপরাধের জন্য ১ ম্যাচ ও দ্বিতীয় অপরাধের জন্য ২ ম্যাচ।
পরশু মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আবাহনীর বিপক্ষে মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব যেহেতু দুই বার এই আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন, তাঁকে শাস্তিও দেওয়া হয়েছে সেভাবে।
এর আগে প্রথম আলোকে মোহামেডান ক্লাবের এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, সাকিবকে চার ম্যাচের জন্য বহিষ্কার করা হতে পারে। গতকাল প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে স্টাম্পে লাথি মারেন সাকিব। পরে আরেকবার স্টাম্প উপড়ে ছুড়ে ফেলেন মাঠে। পরে অবশ্য ম্যাচটা জিতেছে সাকিবের মোহামেডানই।
শুক্রবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর বিপক্ষে ইনিংসের পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলে সাকিবের আউটের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। ওই ওভারেই আবাহনীর অধিনায়ক সাকিবকে হাঁকান একটি চার ও একটি ছক্কা।
পঞ্চম বলে সাকিব এলবিডব্লিউর আবেদন করলে আম্পায়ার সাড়া দেননি। এতে মেজাজ হারিয়ে সাকিব নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তের স্টাম্পে লাথি মেরে ভেঙে দেন।
৫.৫তম ওভারের সময় তুমুল বৃষ্টি নামলে আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান খেলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। তিনি যখন মাঠকর্মীদের কাভার আনার ইশারা দিচ্ছেন, তখন সাকিব আম্পায়ারের দিকে এগিয়ে গিয়ে তিনটি স্টাম্পই তুলে উইকেটের ওপর ছুড়ে মারেন। তিনি এ সময় আম্পায়ারকে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু একটা বলছিলেন।
বৃষ্টির সময়ে খেলোয়াড়েরা যখন মাঠ ত্যাগ করছিলেন, তখনো নিজেকে সামলাতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল সাকিবের। তিনি এ সময় আবাহনীর ড্রেসিংরুমের দিকে তাকিয়ে কিছু বললে ক্ষেপে গিয়ে তেড়ে আসেন আবাহনীর কোচ মাহমুদ সুজন। এগিয়ে যান সাকিবও। মোহামেডানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার তখন জাপটে ধরে থামান সাকিবকে। খালেদ মাহমুদ সুজনকে থামান মোহামেডানের শামসুর রহমান শুভ।