Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

কেজিতে তরমুজের দাম পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল ২০২১, ০২:৪৫ PM
আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২১, ০২:৪৫ PM

bdmorning Image Preview


গত কয়েক বছর ধরেই কেজিদরে তরমুজ বিক্রির চল শুরু হলেও এবার বেশ কিছু জেলায় জরিমানার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী, আড়ত থেকে কোনো ফল পিস হিসেবে কিনে আনলে তা পিস হিসেবেই বিক্রি করতে হবে। আর কেজি দরে কিনে আনলে বিক্রি করতে হবে কেজি দরে।

কুষ্টিয়ায় রমজানের এক সপ্তাহ আগেও তরমুজ ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সে সময় তুলনামূলক বড় ও ভাল মানের তরমুজ বিক্রি হয়েছে ২৭ থেকে ৩০ টাকায়। রমজান শুরু আগেই দাম বেড়ে ৩৫/৪০ এ চলে যায়। এভাবে বাড়তে বাড়তে তরমুজের কেজি ৫০ থেকে ৫৫তে দাঁড়ায়।

এরপরই কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. বনি আমিন ও রিজু তামান্না ২৬ এপ্রিল দুপুরে অভিযান পরিচালনা করেন। জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ২৬ এপ্রিল চার তরমুজ ব্যবসায়ীকে মোট ১১ হাজার টাকা জরিমানা করেন।ম্যাজিস্ট্রেট মো. বনি আমিন সেদিন বলেন, কেজিপ্রতি ২০ টাকাও লাভ করেছেন কেউ কেউ।

কুষ্টিয়ায় অভিযান চালানোর পর বেশ কিছু আড়তে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানেও তরমুজ পাইকারিতে এখন কেজিদরেই বিক্রি হয়। একাধিক আড়তের তথ্য বলছে, তারা কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা আর খুচরা পর্যায়ে বিক্রেতারা পাঁচ টাকার মতো মুনাফা করছেন। তবে ভোক্তাদের মনে বিশ্বাস জন্মেছে যে, তরমুজ আরও কম দামে পাওয়া সম্ভব। যদিও কৃষক আর আড়ৎ পর্যায়ে দামের যে চিত্র দেখা গেছে, তাকে এই বিশ্বাসের ভিত্তি আসলে কতটা, তা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যায়।তবে এখন বিক্রেতাদের লাভ কমার প্রবণতা কমেছে।

কুষ্টিয়ার আড়তে তরমুজ বিক্রি করতে এসেছিলেন ব্যবসায়ী আজগর আলী। তিনি খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকায় তরমুজের চাষ করেন। বলেন, ‘ছোট তরমুজ ৩৫ টাকা কেজি পাইকারি বিক্রি করলাম। আর বড়গুলো বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা কেজিকে।’

আল্লাহর দান ফল ভাণ্ডারের সামনে বসে কথা বলছিলেন তিনি। এই আড়তের মালিক তিন জনের একজন সলক ব্যাপারী বলেন, ‘তরমুজ পাওয়ায় যাবে আর এক সপ্তাহ। দাম আর কমবে না।’

ওই আড়তে তিনি ছোট তরমুজ ৪০ আর বড় তরমুজ ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন খুচরা পর্যায়ে।

পাশের আড়ত জনতা ফল ভান্ডারে হোয়াইট বোর্ডে তরমুজের দাম লিখে রাখা হয়েছে। ছোটগুলো কেজিতে ৪০ আর বড়গুলো কেজিতে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে সেখানে।

এই আড়তের ব্যবসায়ী জালাল শেখ বলেন, ‘আমরা দাম কমাতে পারছি না। কেনা পড়ছে বেশি। গতকাল কম দামে মাল বেচতে গিয়ে পাঁচ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে।’

শহরের মজমপুরের নিউ বিনিময় ফল ভাণ্ডার এর বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আগে থেকেই ৫০ টাকা করে বিক্রি করছিলাম। এখনও তাই।’

তিনি বলেন, ‘আড়ত থেকে কিনে আনছি ৪৫ করে।’

হাসপাতালের সামনের ফলের দোকানি মো. আইনুল দোকানে রাখা রসিদ দেখিয়ে বলেন, ‘আড়ত থেকে এক হাজার ৭৫০ টাকা মণ কিনেছি। অন্য খরচ দিয়ে ৪৫ টাকা পড়ে। ৫০ টাকা না বেচে উপায় নেই।’

কথা হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে অংশ নেয়া কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলা বাজার কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী ফলের ক্ষেত্রে কেজিতে ১০ টাকা লাভ করতে পারবেন এমন বিধান রয়েছে। তবে তরমুজের ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশনা আছে। কেজিপ্রতি তিন থেকে পাঁচটাকার বেশি লাভ করতে পারবেন না। আর কেজি বা পিস যেভাবেই কিনবে সেভাবে বেচতে হবে।’

পাশের জেলা মেহেরপুরের গাংনীতে পৌরসভার উদ্যোগে তরমুজ কিনে সস্তায় বিক্রি করা হয়েছে। পৌরসভা সেখানে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরাও এখন আর ৬০ টাকা কেজি বেচতে পারছেন না।

Bootstrap Image Preview