ভারতের করোনা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। দিন যতো যাচ্ছে ততই শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এই মুহূর্তে ভারত পৃথিবীর মধ্যে সবেচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত ও মৃতের দেশ। এ অবস্থার মধ্যে আগামী জুন মাসের আগে সেরাম থেকে টিকা আসার সম্ভাবনা নেই। এমনকি ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে সময় আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অপরদিকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত ‘কূটনৈতিক বার্তা’পাঠানো হয়েছে। বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, কূটনৈতিক তৎপরতার পরও ভারতের চলমান পরিস্থিতিতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ প্রতিশ্রুত সময়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তবে আজ রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেছেন, আগামী মাসে ২০ লাখ ডোজ টিকা দেবে সেরাম ইন্সটিটিউট।
বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ভারতে প্রতিদিন তিন লাখের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। যেখানে প্রকোপ বেশি সেখানে হাসপাতালে জায়গা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অক্সিজেন সংকট রয়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা খুবই নাজুক।
একটি সূত্র জানায়, সেরাম ইন্সটিটিউট প্রতিমাসে ৬০ থেকে ৭০ মিলিয়ন ডোজ টিকা উৎপাদন করছে। ভারত বায়োটেক করছে ৫ থেকে ১০ মিলিয়ন। এর বিপরীতে প্রতিদিন টিকা নিচ্ছে প্রায় তিন মিলিয়ন। বর্তমানে ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে যারা শুধু তারই টিকা নিতে পারবেন। তবে ১ মে থেকে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে টিকা দেওয়া হবে। বর্তমান যে চাহিদা রয়েছে, ১ মে থেকে তা অনেক বৃদ্ধি পাবে। কারণ, পরিস্থিতি খারাপ দেখে অনেকেই এখন টিকা নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
ঢাকার কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ে ভারত থেকে ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় টিকার বাকি চালান বুঝে পেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
কিন্তু ভারতে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার কারণে টিকা রপ্তানি বন্ধের বিষয়ে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন মহলের চাপ আছে। তাছাড়া ভারতে টিকার বিষয়টি দেখভাল করছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি।
উল্লেখ্য, সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে ৩০ মিলিয়ন ডোজ টিকা কেনার জন্য বাংলাদেশ চুক্তির পর অগ্রিম অর্থ প্রদান করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রতিমাসে ৫০ লাখ করে জুন মাসের মধ্যে তিন কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার কথা সেরামের। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাত্র দেড় কোটি ডোজের বিপরীতে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করেছে।