Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ব্রিটিশ নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে আপিলে হারলেন আইএসে যোগ দেওয়া শামীমা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ০৯:৪৯ PM
আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০, ০৯:৪৯ PM

bdmorning Image Preview


যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব ফিরে পেতে আইনি লড়াইয়ে বড় ধাক্কা খেলেন দেশটি ছেড়ে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসে যোগ দেওয়ার পর রাষ্ট্রহীন দশায় পড়া ব্রিটিশ-বাংলাদেশি শামীমা বেগম। নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার যুক্তরাজ্যের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রথম ধাপের আপিলে হেরে গেছেন এই তরুণী।

লন্ডনের বেথনাল গ্রিন একাডেমির নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় শামীমা আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পাড়ি জমান শামীমা। তখন তার বয়স ছিল ১৫। সেখানে এক আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেন তিনি। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে সিরিয়ার একটি শরণার্থীশিবিরে গর্ভবতী অবস্থায় তাকে খুঁজে পাওয়া যায়। টিনএজ পেরিয়ে বর্তমানে তার বয়স ২০।

যুক্তরাজ্যের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব বাতিল করেন। ব্রিটিশ সরকারের এই বিরুদ্ধে আবেদন করে শামীমার আইনজীবী তাকে দেশে ফিরতে দেওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন।

সেই আপিলের শুনানি শেষেই শুক্রবার সকালে রায় শুনিয়েছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট মামলার বিচারকাজ হয় এমন আংশিক-গোপন আদালতের একটি ট্রাইব্যুনাল। তাতে বলা হয়েছে, যেহেতু শামীমা বেগম রাষ্ট্রহীন অবস্থায় নেই তাই তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া যাবে। বিশেষ 'ইমিগ্রান্ট অ্যাপিলস কমিশন' মন্তব্য করেছে, শামীমা বেগম বাংলাদেশে নাগরিকত্ব চাইতে পারেন।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, কোনো নাগরিক যদি পুরোপুরি রাষ্ট্রহীন হয়ে থাকে - তাহলে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া অবৈধ। তবে কমিশন বলেছে, ২০ বছর বয়সী শামীমা বেগম ‘বংশানুক্রমিকভাবে বাংলাদেশের নাগরিক’ এবং তিনি রাষ্ট্রহীন নন।

শামীমা তার মায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের আবেদনও করার চেষ্টা করেছিলেন। যদিও ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, শামীমা বাংলাদেশের নাগরিক নন। তাকে দেশে প্রবেশ করতে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

শামীমার আইনজীবী ড্যানিয়েল ফারনার বলেছেন, তার মক্কেল দ্রুত এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন করবেন।তিনি জানান, শামীমা বেগম যেসব ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন তা আরও বেড়ে গেছে। বর্তমানে উত্তর সিরিয়ার ক্যাম্প রোজ নামের একটি শরণার্থীশিবিরে রয়েছেন শামীমা।

তবে কমিশন বলেছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ঐ শরণার্থীশিবিরে শামীমা বেগমকে থাকতে বাধ্য করে তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করেননি।

ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা বিচারক ডোরন ব্লাম বলেন, “নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত হওয়ার অনেক বছর আগেই শামীমা স্বেচ্ছায় যুক্তরাজ্য ছেড়ে গেছেন। নাগরিকত্ব প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কারণে তিনি যুক্তরাজ্যের বাইরে নন।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। পাশাপাশি তারা এমন মন্তব্যও করে যে আইনি প্রক্রিয়া চলমান থাকার সময় এ বিষয়ে নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন হবে না।

শামীমার নাগরিকত্ব মামলায় এখন নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে। কোনো বৈধ জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় সরকার শামীমাকে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসতে বাধা দিতে পারে কি-না সেটি খতিয়ে দেখা হবে।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন ছেড়ে স্কুলের দুই বন্ধুর সঙ্গে সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যান শামীমা বেগম। কয়েক দিনের মধ্যেই তুরস্কের সীমান্ত পার করে রাকা'র আইএস সদর দপ্তরে পৌঁছান তিনি।

সেখানে তিনি ধর্মান্তরিত হয়ে আইএস'এ যোগ দেওয়া এক ডাচ নাগরিককে বিয়ে করেন। এই দম্পতির তিনটি সন্তান ছিল- যাদের সবাই মারা গেছে।

Bootstrap Image Preview