রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনা অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে দাবি করে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো যুদ্ধাপরাধের বিচার নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের আরও সময় প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২৩জানুয়ারি) নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের (আইসিজে) মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা মামলার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের আগে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
সূচির বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর যুদ্ধাপরাধ হতে পারে, তবে গণহত্যার ঘটনা ঘটেনি। রোহিঙ্গারাই বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত করে প্রচার করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের বিচার ব্যবস্থার ওপর শ্রদ্ধা রাখার আহ্বান জানিয়ে সু চি বলেন, সেনাবাহিনীর বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই ২০১৭ সালে রাখাইনে অভিযানকালে সেনাদের সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার করা হবে। ‘আমাদের উচিৎ এই বিচার প্রক্রিয়ার ব্যাপারে শ্রদ্ধাশীল থাকা, এবং অযৌক্তিক দাবি না তোলা।’
সু চি এও বলেন, বিশ্বের আর সব দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মতো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছেও নিজ সদস্যদের দায়বয়দ্ধতার ব্যাপারটিকে নিশ্চিত করা কঠিন।
এরপরপরই আন্তর্জাতিক মহলের উদ্দেশ্যে দুঃখ প্রকাশ করে সু চি বলেন, মিয়ানমারের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ অভিযোগই বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মুখ থেকে শোনা। মিয়ানমার সরকারের প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশন আইসিওই ওইসব অভিযোগকে অতিরঞ্জিত বলে অভিহিত করেছে।
সু চি জানান, এক্ষেত্রে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর এবং জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তাদের জানার সীমাবদ্ধতার শিকার হয়েছে মিয়ানমার। দেশীয় আইনি প্রক্রিয়ায় এই কুকর্মের সঙ্গে জড়িতদেরকে শাস্তি দেয়া সম্ভব ছিল।
১৯৪৮ সালের গণহত্যা কনভেনশন অনুসারে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়ার অনুরোধসাপেক্ষে বেশ কয়েকটি জরুরি পদক্ষেপ মঞ্জুর করেন আদালত। গণহত্যা বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার যে আবেদন গাম্বিয়া করেছে, তা যৌক্তিক বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)।