Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

আলোচিত শবরীমালা মন্দিরে ঢুকতে দেয়া হলো চার হিজড়াকে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:৫৭ PM
আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:৫৭ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ভারতের বহুল আলোচিত শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের জন্য চারজন হিজড়াতে অনুমতি দেয়া হয়েছে। প্রথমে তাদের মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে বাধা দেয়া হলেও পরে পুলিশ ও মন্দির কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনার পর তারা মন্দিরে ঢুকে দর্শন করতে পেরেছেন। তারা কোনোভাবেই ঋতুমতী নন বা হওয়ার সম্ভাবনাও নেই-এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত তাদের মন্দিরে তাদের ঢুকতে দিয়েছেন। খবর বিবিসির

ঋতুমতী বয়সের মেয়েদের প্রবেশাধিকারকে কেন্দ্র করে গত কয়েকমাস ধরে তুমুল বিতর্ক আর আন্দোলন চলছে শবরীমালা মন্দিরকে ঘিরে। শবরীমালায় দশ থেকে পঞ্চাশ বছর বয়সী নারীদের ঢোকার অনুমতি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় রয়েছে। তবে প্রায় তিনমাস হতে চললেও এ রায়ের বাস্তবায়ন হয়নি। ভক্তদের তুমুল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের মুখে আজ পর্যন্ত ওই হিন্দু মন্দিরে ওই বয়সী কোনো নারী ঢুকতে পারেননি।

সোমবার ওই মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করেন পুরুষ শরীর থেকে নারীতে রূপান্তরিত হওয়া চারজন ট্রান্সজেন্ডার (হিজড়া) অনন্যা, ত্রুপ্তি, রেনজুমল ও অবন্তিকা। তবে তারাও তীব্র বাধার সম্মুখীন হন। কিন্তু পরে কেরালা পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে মন্দিরের প্রধান পুরোহিত যখন নিশ্চিত হন তারা কোনোভাবেই ঋতুমতী নন বা তাদের হওয়ার সম্ভাবনাও নেই, তখনই ওই চারজনকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়।

প্রথাগত কালো পোশাক পরে ও ‘ইররুমুদিকেট্টু’ নামে সনাতন পূজার উপকরণ নিয়ে তারা মঙ্গলবার বিকেলে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন। তাদেরই একজন বিবিসিকে পরে জানান, শবরীমালায় ঢুকতে পেরে তারা ভীষণই খুশি। তিনি বলেন, ‘আমরা ট্রান্সজেন্ডার হলেও যেভাবে আজ ভগবান আয়াপ্পার দর্শন করতে পারলাম তাতে আজ আমাদের জীবন সার্থক।’

ওই চারজনের অন্যতম ত্রুপ্তি পরে বিবিসি তামিল বিভাগকে বলেন, ‘ওই মন্দিরে ঢোকার জন্য যেসব রীতি-রেওয়াজ পালন করতে হয় সেগুলো তারা সব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন।’

ক্রুপ্তি বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য অত্যন্ত খুশির ও পরিতৃপ্তির একটা দিন। মন্দির দর্শনের জন্য আমাদের দিক থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি ছিল। তারপরেও পুলিশ-প্রশাসন ও মন্দির কর্তৃপক্ষ যেভাবে আমাদের সাহায্য করেছে তাতে তাদের ধন্যবাদ জানাই।’

তবে অ্যাক্টিভিস্টরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সেখানে এখনও যে কোনো নারী ঢুকতে পারেননি তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিজড়াদেরও মন্দিরে প্রবেশ করতে গিয়ে বেশ কাঠখড়ি পোড়াতে হয়েছে। হিজড়াদের মন্দিরে ঢোকার ক্ষেত্রে নিয়মটা পরিষ্কার নয়-এই যুক্তিতে কেরালা পুলিশও প্রথমে তাদের সাহায্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। পরে অবশ্য তারা যখন পুলিশের মহানির্দেশক মনোজ আব্রাহামের সঙ্গে দেখা করেন তারপরেই তাদের মন্দিরে ঢোকার পথ প্রশস্ত হয়।

মন্দিরে পূজার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা

আব্রাহাম জানিয়েছেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে শবরীমালায় যারাই ঢুকতে চাইবেন পুলিশ তাদেরই সাহায্য করবে এবং সে ক্ষেত্রে কোনো বাধাই মানা হবে না।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এমন অভয় দেয়া হলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। মন্দিরে ঋতুমতী মেয়েদের প্রবেশ আটকাতে রাজ্যের বিজেপি নেতারা এখনও অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। তাছাড়া শবরীমালায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তদারকির জন্য হাইকোর্ট একটি তিন সদস্যের কমিটি গড়ে দিলেও কোনো কিশোরী বা যুবতী এখনও মন্দিরে ঢুকতেই পারেননি।

Bootstrap Image Preview