Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সবজি উৎপাদন করে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না সাতক্ষীরার কৃষকরা

রাহাত রাজা, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৪২ PM
আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৮:৪২ PM

bdmorning Image Preview


শীতকালিন সবজি উৎপাদন করে ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না সাতক্ষীরার কৃষকরা। গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রকার ভেদে কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা কম দামে বাজারে বিক্রি করছে কৃষকরা।

ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা বলছেন, স্থানীয় ছাড়াও জেলার বাইরে থেকে সবজি‘র সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমতির দিকে। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন জেলার সবজি চাষীরা। 

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের সবজি চাষি আমজাদ হোসেন জানান, চলতি শীত মৌসুমে ২ বিঘা পরিমান জমিতে সবজি চাষ করেছেন। এরমধ্যে দেড় বিঘাতে ফুলকপি এবং আধা বিঘা পরিমান বাধাকপি। এ পর্যন্ত দু‘দফা ফুলকপি উত্তোলন করে বাজারে বিক্রি করেছেন কৃষক আমজাদ হোসেন। কিন্ত বাজারে ফুলকপি‘র যে দাম পাওয়া যাচ্ছে তাতে হতাশ হয়েছেন তিনি।

চাষী আমজাদ হোসেন বলেন, গত মৌসুমে এই সময় যে ফুলকপি পাইকারী বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ২২ থেকে ২৫ টাকা দরে তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৪ টাকা কেজি দরে। একই অবস্থা বাধাকপির দামেও। প্রতি মন বাধাকপি ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছরের এই সময় বিক্রি হয়েছে ৪৪০ থেকে ৪৮০ টাকা পর্যন্ত।

একই উপজেলার আগড়দাড়ি গ্রামের কৃষক নুরুল আমিন জানান, বারো মাসই নানা ধরনের সবজি উৎপাদন করেন। চলতি শীত মৌসুমে ৩ বিঘা পরিমান জমিতে ওলকপি, বাধাকপি এবং পালন শাক চাষ করেছেন। কিন্ত বাজারে সবজির ভালো দাম না থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এই কৃষক। তিনি বলেন, গত মৌসুমে এই সময় যে ওলকপি পাইকারী বিক্রি করেছেন প্রতি কেজি ২০ থেকে ২২ টাকা তা এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ১৩ থেকে ১৪ টাকা কেজি দরে। ১২ টাকার বাধাকপি ৬ থেকে ৭ টাকা কেজিতে বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে উৎপাদন খরচ বাচবে কি না তাতে সংশয় রয়েছে বলে জানান তিনি।

সাতক্ষীরা জেলা কাঁচামাল সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রওশন আলী জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় সবজির দাম কমে গেছে। তিনি বলেন, স্থানীয় ভাবে সরবরাহের পাশাপাশি জেলার বাইরে থেকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমান সবজি সাতক্ষীরায় আসছে। ফলে সবধরনের শীতকালিন সবজির দাম কমতির দিকে।

এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে সাতক্ষীরার জেলার ৭টি উপজেলায় শীতকালিন সবজির আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৯ হাজার ৭৯৫ হেক্টর। এরমধ্যে সাতক্ষীরা সদরে ২ হাজার ৪৫০ হেক্টর, কলারোয়ায় ১ হাজার ৭৩০ হেক্টর, তালায় ১ হাজার ৭৬০ হেক্টর, দেবহাটায় ৫৭৫ হেক্টর, কালিগঞ্জে ১ হাজার ৯২০ হেক্টর, আশাশুনিতে ৬৫০ হেক্টর ও শ্যামনগরে ৭১০ হেক্টর। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, ওলকপি, বাধাকপি, পালন শাক, সিম, বরবটি ও টমেটো। গত শীত মৌসুমে সাতক্ষীরার ৭ টি উপজেলাতে ৯ হাজার ২২৫ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছিলো। সে হিসাবে অনুযায়ী চলতি মৌসুমে ৫০০ বিঘা জমিতে আবাদ বেশি হয়েছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপপরিচালক অরবিন্দ বিশ্বাস জানান, গত মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরা জেলায় শীতকালিন সবজির আবাদ বেড়েছে। তাছাড়া এ জেলায় বারো মাসই নানা ধরনের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। 

Bootstrap Image Preview