Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

খামারিদের উদ্বিগ্ন, চাহিদার চেয়ে বেশি কোরবানির পশু খুলনায়

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৯ জুলাই ২০১৯, ১০:৪০ AM
আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯, ১০:৪০ AM

bdmorning Image Preview


আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে খুলনায় চাহিদার অতিরিক্ত সোয়া লাখ পশু প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। ফলে এ অঞ্চলে কোরবানির পশুর সংকট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি হওয়ায় পশুর দামও কম হতে পারে। এই অবস্থায় হতাশ ও উদ্বিগ্ন খামারিরা।

খুলনার তেরখাদার পূর্ব কাটেঙ্গা এলাকার খামারি রসুল মোল্লা বলেন, ‘কোরবানিকে সামনে রেখে বিদেশি বিভিন্ন জাতের সাতটি গরু লালন পালন করেছি। এবার ভালো দাম পাবো বলে আশা ছিল।’ তিনি বলেন, ‘মানভেদে প্রতিটি গরুর দাম ৮০ হাজার থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়ার আশা রয়েছে। কিন্তু এবার বাজারে গরু বেশি হওয়ায় প্রত্যাশিত দাম পাবো কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি।’

তার মতো খুলনা বিভাগের ১০ জেলার এক লাখ ৩৯ হাজার ৫৩৯ জন খামারি প্রত্যাশিত দাম পাওয়া নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন।
এবার খামারিরা প্রতিদিন খাবার হিসেবে খৈল, ভুষি, কুড়ো, ফিড ও কাঁচা ঘাস দিয়ে পশু মোটাতাজা করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করছেন।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে পশু কেনা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। কোরবানির জন্য এখন থেকেই গরু কিনে মজুদ করছেন তারা। ঈদ সামনে রেখে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পশুর দরদাম শুরু করেছেন। কিনছেনও অনেকে। খুলনার তেরখাদা, ফুলতলা, রূপসা, দিঘলিয়া ও ডুমুরিয়া উপজেলা; নড়াইলের কালিয়া এবং যশোরের অভয়নগর ও মনিরামপুরে খামারের সংখ্যা বেশি। খামারি পর্যায়েও পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কোরবানিকে সামনে রেখে ব্যস্ত খুলনা অঞ্চলের গবাদিপশুর খামার মালিকরা। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারের ওপর নির্ভর করে পশুগুলোকে কোরবানির উপযুক্ত করে গড়ে তুলছেন তারা।

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, আসন্ন ঈদুল আজহায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় প্রায় ছয় লাখ পশু কোরবানির সম্ভাবনা রয়েছে। বিপরীতে খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে সাত লাখ ৩১ হাজার ৮৪৪টি কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। ফলে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে আরও এক লাখ ২৫ হাজার পশু অন্য বিভাগে পাঠানো হবে।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের সূত্র মতে, সাত লাখ ৩১ হাজার ৮৪৪টি কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে রয়েছে ষাঁড় দুই লাখ ৮০ হাজার ৪৮টি, বলদ ৩১ হাজার ১৫০টি, গাভী (বাচ্চা উৎপাদনে অক্ষম) ৩৩ হাজার ৩৭৯টি, মহিষ ১৯ হাজার ৩৩টি, ছাগল তিন লাখ ৭৫ হাজার ২৭০টি ও ভেড়া ৯ হাজার ৪৪৩টি। অন্যান্য গবাদিপশু আছে ৬২১টি।

সূত্র জানায়, কোরবানির জন্য খুলনা অঞ্চলের খামারিদের মাধ্যমে নিরাপদ পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করার কার্যক্রম সার্বক্ষণিক নিবিড় পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সুষম খাবার ও নিয়মিত কৃমিনাশকের ব্যবস্থাসহ পশু পালনের ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়ার জন্য খামারিদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ কারণে গরু উৎপাদনে সফলতা এসেছে।

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাসুদ আহমেদ খান বলেন, ‘খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় চাহিদা অনুযায়ী খামারগুলোয় পর্যাপ্ত সংখ্যক পশু আছে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদিত পশু দিয়েই কোরবানির পশুর চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। এতে স্থানীয় খামারিরা লাভবান হবেন।’ তিনি জানান, প্রতিটি থানায় অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়নে ইনজেকশনসহ বিভিন্ন ট্যাবলেট ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করতে মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। সুষম খাবার এবং নিয়মিত কৃমিনাশকের ব্যবস্থাসহ পশুপালনের ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

Bootstrap Image Preview