ভারতে ফের লাঞ্ছনার শিকার হলেন মুসলমান যুবক। এবার মাথায় টুপি পরার অপরাধে মারধর ও হুমকির মুখে পড়তে হলো মোহাম্মদ বরকত নামের এক যুবককে।
রবিবার (২৬ মে) দিবাগত রাত ১০ টার দিকে নয়া দিল্লির গুরুগ্রাম শহরে এ ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে, রবিবার রাত ১০টার দিকে রমজানের তারাবিহ নামাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন মোহাম্মদ বরকত। মাথায় ছিল টুপি, যার কারণে গুরুগ্রামের সর্দার বাজারের কাছে বিপদে পড়েন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, তাকে দেখেই এগিয়ে আসেন পাঁচ থেকে ছয় জন যুবক। প্রশ্ন করে, কেনো এই টুপি পড়েছে সে। নামাজের কথা বলতেই দুর্বৃত্তরা আরও রেগে যায়। এরপরই টুপিটি খুলে দেয় তারা। হুমকি দিয়ে জানিয়ে দেয় ওই এলাকায় মাথায় টুপি পরে চলা ফেরা করা নিষেধ।
এখানেই শেষ নয়। টুপিটি তার মাথা থেকে খুলে নিয়ে যুবকরা তাকে থাপ্পড়ও মেরেছে বলে অভিযোগ করে ২৫ বছরে বরকত।
তিনি বলেন, তারা আমাকে জোরপূর্বক “ভারাত মাতা কি জে” এবং “জয় শ্রী রাম” বলতে বলে। কিন্তু আমি অস্বীকৃতি জানালে, তারা আমাকে শূকরের মাংস খাওয়ানোর হুমকি দেয়।
বরকত আরও বলেন, ‘তাদের মধ্যে একজন খুব বাজে একটা গালি দেয় আমাকে।
এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গুরুগ্রামের সর্দার বাজার এলাকায়। অভিযুক্ত যুবকরা কারা তার সন্ধান করছে পুলিশ। অশান্তি এড়াতে সতর্ক রয়েছে পুলিশ।
এদিকে গত শনিবার গোমাংস রাখার অভিযোগে মধ্যপ্রদেশের সেওনিতে নারীসহ তিন মুসলিমকে গাছের সঙ্গে বেধড়ক মারধর করা হয়।
জানা যায়, একটি অটোতে করে দুই যুবক ও এক নারী যাচ্ছিলেন। হঠাৎ গুজব রটে তারা সঙ্গে করে গোমাংস নিয়ে যাচ্ছেন। স্বঘোষিত গো-রক্ষকরা অটো থেকে তাদের রাস্তায় নামায় এবং পেটাতে শুরু করে। এ সময় তারা প্রত্যেকে মুখে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে থাকেন।
এই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। তাতে দেখা যায়, এক মুসলিম যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পেটাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের সমর্থকরা। অন্য এক যুবককে জুতা দিয়ে এক নারীকে মারতে বাধ্য করা হয় এবং প্রতিবার আঘাতের সময় ‘জয় শ্রী রাম’ বলতে বাধ্য করা হয়। সঙ্গে চলতে থাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালি।
এ ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ মামলা নিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। জড়িতদের খুঁজতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে ভোপাল কেন্দ্রে সদ্য নির্বাচিত বিজেপি পার্লামেন্ট সদস্য সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরের সমর্থনে দেখা গিয়েছিল বলে জানা গেছে।