Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

এবার সৌদি বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরকবাহী ড্রোন হামলা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ মে ২০১৯, ০৭:৫৫ PM
আপডেট: ২১ মে ২০১৯, ০৭:৫৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সৌদি আরবের বিমানবন্দর ও সামরিক ঘাঁটিতে বিস্ফোরকবাহী ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলে ইরান-সংশ্লিষ্ট হুতি বিদ্রোহীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট।

তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

মঙ্গলবার নাজরান প্রদেশে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। তবে সৌদি গণমাধ্যম আরব নিউজ দাবি করছে, দেশটির নাজরান প্রদেশের দক্ষিণ সীমান্তের বেসামরিক এলাকায় বিস্ফোরকবাহী ড্রোন হামলার চেষ্টা করেছে হুতি বিদ্রোহীরা।

ওয়াশিংটন পোস্ট ইয়েমেনের আল মাসিয়ার টেলিভিশনের বরাত দিয়ে জানায়, নাজরানের বিমান বন্দরে কাসেফ-কে ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। রাজধানী রিয়াদ থেকে ৮৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে নাজরানের অবস্থান।

কর্নেল তুর্কি আল-মালিকি সৌদির প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) মাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানায়, সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্যবস্তটি বড় ছিল।

আল-মালিকি বলেন, হুথি সমর্থিত ইরানের সন্ত্রাসী সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। বেসামরিক স্থাপনা টার্গেট করে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এমনকি বেসামরিক নাগরিক ও সব জাতীয়তাবাদের জন্য হুমকি তৈরি করা হয়েছে।

এই বিবৃতিতে হতাহতের খবর বা অন্য কোনো তথ্য দেয়া হয়নি।

এদিকে সোমবার আল মালিকি বলেন, পবিত্র নগরী মক্কা এবং জেদ্দায় দু’টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। তবে টার্গেটে আঘাত হানার আগেই সৌদি বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী গুলি চালিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র দু’টি ভূপাতিত করেছে।

আল আরাবিয়াহ নিউজ জানায়, ইরানি মদদপুষ্ট ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবে ২টি ব্যালাস্টিক মিসাইল ছুড়লে একটি জেদ্দার রেড সি পোর্টের কাছে, মক্কাভিমুখী অপর মিসাইলটি মক্কার ৫০ কিলোমিটার দূরে তায়েফে ভূপাতিত করে সৌদি এয়ার ডিফেন্স ফোর্সেস।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, সৌদির গুরুত্বপূর্ণ দুটি শহর মক্কা ও জেদ্দা নগরীকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছে। হুতিদের ছোড়া মিসাইলগুলোর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ছড়িয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে সৌদি আরব এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে গত কয়েক সপ্তাহ যাবত চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে হুতিদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নিতে পারে দেশটি।

রিয়াদভিত্তিক সৌদির রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. হামদান আল-শেহরি বলেন, হুথি এবং তেহরানে থাকা তাদের প্রভূরা পবিত্র নগরী মক্কা লক্ষ্য করে প্রথমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে; বিষয়টি তেমন নয়। ইসলামের পবিত্রতম স্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাতে তাদের বিবেকের কোনো দংশন নেই।

আল শেহরি বলেন, তারা পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতার কোনো তোয়াক্কা করে না। আজ তারা যা করছে এবং অতীতে যা করেছে; তাতে পরিষ্কার হয়েছে যে, মুসলিম বিশ্বের প্রাণ কেন্দ্রে হামলার নকশা করেছে তারা।

তিনি বলেন, ‘পবিত্র ভূমিকে রক্ষার জন্য মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে আসার এখনই উপযুক্ত সময়। আমাদের পবিত্র স্থাপনা ইরান, হুথি এবং মিলিশিয়াদের হামলার শিকার।’ আল শেহরি বলেন, শুধুমাত্র নিন্দা জানালেই হবে না। ইরান এবং হুথিরা শেষ সীমা অতিক্রম করেছে। তেহরানের বিরুদ্ধে এখনই কঠিন ব্যবস্থা নিতে হবে।

সৌদিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন সরকার। মক্কা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে পুরো মাত্রার সন্ত্রাসী আক্রমণ বলে মন্তব্য করেছে সানা।

অন্যদিকে, জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আবদাল্লাহ আল-মোয়াল্লিমি বলেছেন, গত ১৪ মে সৌদির দাওয়াদমি ও আফিফ শহরে তেল স্থাপনা লক্ষ্য করে বিস্ফোরক বোঝাই সাতটি ড্রোন ছুড়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।ইয়ানবু বন্দর হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তেলের সরবরাহ করা হয় সৌদির পূর্ব-পশ্চিমাঞ্চলের এই তেল স্থাপনা থেকে।

প্রসঙ্গত, ইয়েমেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল-হাদি সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্যে ২০১৫ সালের মাঝের দিকে দেশটির বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে হামলা শুরু সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব জোট।

সৌদি জোটের এই হামলা শুরুর পর থেকেই পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা রিয়াদ-সহ সীমান্তবর্ন্তী শহরগুলোতে প্রতিনিয়ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়ে আসছে।

Bootstrap Image Preview