সিরিজ বোমা হামলায় তছনছ দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলংকা। রাজধানী কলম্বোর তিনটি গীর্জা ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেল ও আরো দুটি স্থান-সহ মোট আটটি রক্তক্ষয়ী হামলা হয়েছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে প্রায় ২০৭ জনের। রোববারের এই হামলায় আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ৪৫০ জন।
ইস্টার সানডের সকালে কলম্বোর বিলাসবহুল সিনামুন গ্রান্ড, শাঙ্গরি-লা ও কিনসবুরি হোটেল ও কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি গীর্জা, নেগোমবোর সেন্ট সেবাস্তিয়ান গীর্জা ও বাত্তিকালোয়ার জিওন গীর্জায় ওই হামলা হয়।
গীর্জায় উপস্থিত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষরা যখন প্রার্থনায় মত্ত ছিলেন, ঠিক সেই সময় বোমা বিস্ফোরণ হয়। মুহূর্তের মধ্যে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় গীর্জা। কলম্বোর সেন্ট অ্যান্থনি গীর্জায় বিস্ফোরণের মুহূর্তের একটি ভিডিও ধরা পড়েছে স্থানীয় এক গাড়ি চালকের মোবাইল ফোনে।
৪ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, ব্যস্ত সড়কের বুক চিড়ে এগিয়ে চলছে অটোরিকশা, বাস, ট্রাক। এর মাঝেই হঠাৎ প্রবল বিস্ফোরণের শব্দে উড়ে যায় অ্যান্থনি গীর্জার ছাদ। আকাশে উড়তে থাকে ধোঁয়া।
এসময় পথচারী ও গীর্জার সামনের থাকা লোকজন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি শুরু করেন। অনেকেই রাস্তা থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে ফেরত যান।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী কিংবা ব্যক্তি রোববারের এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে হামলার পেছনে আত্মঘাতী বোমারুরা জড়িত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত সাত সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তবে পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা প্রাথমিক তদন্তে হামলার সঙ্গে ইসলামপন্থী মৌলবাদী গোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে বলে আলামত পেয়েছেন। এমনকি রাজধানীর একটি হোটেলে বিস্ফোরণের সঙ্গে দুই ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা তারা পেয়েছেন। ওই ব্যক্তি ইসলামপন্থী একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত।
বোমা হামলায় লণ্ডভণ্ড শ্রীলংকায় আগামী ১০ দিনের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, স্কুল কলেজ। দেশজুড়ে অতিরিক্ত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।