ভারতে লোকসভা নির্বাচনে সাত দফার মধ্যে দুই দফা ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি রয়েছে এখনো পাঁচ দফা। যেকোনো সময়েই ভোটের হাওয়া পাল্টে যেতে পারে। এবারের নির্বাচনে ভোটের হিসেব পাল্টে দিতে পারে দেশটির বেওয়ারিশ গরু।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, গরু যতদিন দুধ দেয় ততদিন ঘরের লক্ষি বানিয়ে রাখেন মালিক। এছাড়া গোমাতা হিসেবে পুজাও চলে। কিন্তু যখন দুধ দেওয়া শেষ হয়। তখনই গো মাতাকে ঘরছাড়া করা হয়। এসব গরু হয়ে যায় বেওয়ারিশ। গোটা ভারতে বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে এই বেওয়ারিশ গরুর সমস্যা প্রকট। গোমাতা তিন রাজ্যেই নিজভূমে পরবাসী।
গোরুর খরচ অনেক। দুধও দেবে না, আবার খরচও বিপুল! তাই দুধ দেয়া বন্ধ করলেও গরুকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দেন মালিকরা। তারা হয়ে যায় ঠিকানাহীন।
এসব গরুকে রাখার জন্য সামান্য পরিমাণে গোশালা থাকলেও সেখানে গরু রাখতে নির্দিষ্ট পরিমাণে ফিস দিতে হয়। কিন্তু মালিকেরা এই ঝামেলায় না গিয়ে গরু ছেড়ে দেন। যেখানে খুশি চলে যাক। এসব গরুর জন্য গোশালা পর্যাপ্ত না-থাকায় কৃষকদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ছে রাজ্য সরকারের ওপর৷ সরকার কেন গোশালা বানাচ্ছে না? হাল এতটাই খারাপ যে, বেওয়ারিশ গরু নিয়ে ক্ষোভ যদি ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করে তা হলেও আশ্চর্যের কিছু নেই৷
আইনত সেখানে গোমাংস বিক্রি বন্ধ। গরু পাচারও বন্ধ। তো এত গরু যায় কই! যোগীর রাজ্যে অভুক্ত গরু তাই কৃষকের খেতে হানা দিচ্ছে। খেয়ে নিচ্ছে সমস্ত ফসল। কৃষককে গোমাতার আগ্রাসন রুখতে রাতভর বসে থাকতে হচ্ছে খেতের ধারে। অভূতপূর্ব ধর্মসঙ্কটে চাষিরা। তিন রাজ্যেই পিল পিল করছে বেওয়ারিশ গোরু।
দিল্লিতেও গরু নিয়ে সমস্যা বাড়ছে৷ রাস্তা জুড়ে গরুর পাল। কিন্তু রাখাল নেই। প্রায়ই অফিস টাইমে রাস্তায় গরু দাঁড়িয়ে পড়ছে। ফলে যানজট। তবে দিল্লি শহরে গরুর সংখ্যা তুলনায় কম৷ গ্রামের দিকে বেশি৷ তাই সমস্যাটা সেখানে তীব্র হয়নি, যেটা হয়েছে উত্তরপ্রদেশসহ গোবলয়ের অন্য রাজ্যে৷ রাজস্থানেও গরু নিয়ে সমস্যা ভয়াবহ৷
২০১২ সালের হিসেব, উত্তরপ্রদেশে ১০ লাখেরও বেশি গরু আছে৷ গত সাত বছরে সেই সংখ্যা অনেক বেড়েছে৷ এ দিকে ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই রব। অনেক জায়গায় কৃষকরা রাতে বেওয়ারিশ গোরু ধরে সরকারি স্কুল বা কোনও জায়গায় রেখে দিচ্ছেন, যাতে তাদের ফসল ঠিক থাকে৷ সকাল হলে সেগুলিকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে৷
গোবলয়ের গোরু এখন শুধুই ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে নেই। ভোটের বাক্স যদি কয়েক জায়গায় শিংয়ের গুঁতোয় উল্টে যায়, অবাক হওয়ার কিছু নেই৷