অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ রুখতে নারীদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি বাজারে এসেছে প্রায় ৫০ বছর আগে। পরিবার পরিকল্পনার ক্ষেত্রে নারীদের জন্য রয়েছে আরও কত বৈজ্ঞানিক নিয়ম বা পদ্ধতি। তবে এবার পুরুষের জন্যেও জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। বড়িটির নাম ইলেভেন বেটা এম এন টিডিসি।
তবে তা এখনবধি বাজারে ছাড়া হয়নি। এর কারণ এ বড়ি পুরুষ দেহে নিরাপদ কি-না, এর কোনো প্বার্শ প্রতিক্রিয়া আছে কি-না সে বিষয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এ নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালানো হয়। এবার জানা গেল, পুরুষের জন্য আবিস্কৃত জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি প্রাথমিকভাবে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
আমেরিকার নিউ অর্লিনসে অনুষ্ঠিত এন্ডোক্রিন ২০১৯ নামের এক মেডিকেল সম্মেলনে বলা হয়েছে, পুরুষের জন্য তৈরি জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি নারীদের বড়ির মতোই নিরাপদ।
তারা জানান, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএ বায়োমেড নতুন এই বড়ি তৈরি করেছে। ৪০ জনের ওপর প্রথম পর্বের পরীক্ষা চালিয়ে ইতিবাচক ফল পেয়েছেন তারা।
গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন, এ বড়ি ব্যবহারে সেই ৪০ জনের মধ্যে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
পুরুষ দেহে এ বড়ি কী কাজ করবে প্রশ্নের জবাবে সম্মেলনে আসা গবেষকরা জানান, এই বড়িতে এক ধরনের হরমোন দেয়া হয়েছে যা পুরুষ দেহের শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধে কাজ করবে।
এমন জবাবে অনেকের মনেই সন্দেহের দানা বাঁধে যে, এভাবে শুক্রাণু উৎপাদন বন্ধ করে দিলে পরবর্তীতে সেই পুরুষ যৌন সমস্যায় ভুগবেন নাতো? বাবা হওয়ার ক্ষমতা হারাবেন না তো?
তাদের মতে, সন্তান জন্মদানের ক্ষমতাসম্পন্ন পুরুষের দেহে প্রতিনিয়তই নতুন শুক্রাণু তৈরি হতে থাকে। আর এ বড়িটি শুক্রাণু তৈরিতে ব্যস্ত দেহের নানা ধরনের হরমোনকেই ধ্বংস করে দেয়। সে হিসেবে বড়ি খাওয়া ছেড়ে দিলে দেহ ফের একই হারে শুক্রাণু তৈরি করবে কি-না। এমন উদ্বিগ্নতার জবাব দিয়েছেন এ গবেষণায় অংশগ্রহণকারী প্রফেসর ক্রিস্টিনা ওয়াং।
তিনি বলে, ২৮ দিন ধরে বড়িটি ৪০ জন পুরুষকে খাওয়ানো হয়েছে। এতে তাদের হরমোনে স্তর কমে যায়। তবে তারা যখন বড়ি খাওয়া ছেড়ে দেন, দেখা যায় তাদের যৌনক্ষমতা আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।
এই বড়ি চলাকালীন শুক্রাণু উৎপাদন কমাবে কিন্তু যৌন অনুভূতি ও সন্তান জন্মদানের বিষয়টি আগের মতই থাকবে বলে দাবি করেন এই গবেষক।
তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে আরও বড় আকারে এবং দীর্ঘ সময় নিয়ে পরীক্ষা চালানোর কথাও বলেন।
তিনি জানান, প্রাথমিক ফলাফলে আমরা কোনো প্বার্শপ্রতিক্রিয়া পাইনি আমরা তবে আরও বেশ কিছু গবেষণার পর এ বড়ি বাজারে আনা হবে। সেক্ষেত্রে বড়িটি আসতে লেগে যেতে পারে আরও এক দশক সময়।