Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জুয়ার দেনা মেটাতে মেয়েকে বিক্রি করে বেকার বাবা!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২১ মার্চ ২০১৯, ০৬:৪৫ PM
আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯, ০৬:৪৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


নিজের মেয়েকে অনলাইনে বিক্রির দায়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত ওই ব্যক্তির নাম জিয়াং। জুয়ার দেনা মেটাতে শিশুকন্যাকে ৬০ হাজার ইউয়ানে বিক্রি করেছিলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের গুইঝো প্রদেশের গুইয়াং-এ।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম মেইল অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, জুয়া খেলতে গিয়ে ৬০ হাজারের বেশি ঋণ করে ফেলেন জিয়াং। পরে সে দেনা মেটাতে অনলাইনের মাধ্যমে এক দম্পতির কাছে মেয়েকে বিক্রি করেন তিনি। জিয়াং বেকার ছিলেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জিয়াং তার এক বছরের মেয়েকে বাড়ি থেকে নিয়ে যান। এ সময় তিনি তার স্ত্রীকে বলেন, ‘মেয়ে এখন থেকে তার দাদির সঙ্গে থাকবে।’

এর পর গত নভেম্বরে জিয়াং তার স্ত্রীকে বলেছিলেন, তাদের বাড়ি থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে জুনাই শহরে তার মায়ের সঙ্গে থাকবেন তারা। এ কথা শোনার পর স্ত্রী সান্যামড ওয়াং-এর সন্দেহ বাড়তে থাকে। কারণ প্রায় তিন মাস ধরে তিনি তার মেয়ের কোনো খবর পাননি। আবার প্রতিবার যখন তিনি মেয়ের ব্যাপারে স্বামীকে জিজ্ঞাসা করেন, তখন তার স্বামী নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এর পর ফেব্রুয়ারি মাসে একদিন বাড়িতে স্বামীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে দেখছিলেন শিশুটির মা। তখন তিনি তার স্বামী এবং তার মেয়ের ক্রেতাদের মধ্যে কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট খুঁজে পান। একই দিনে তিনি তার শাশুড়ির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু তিনি তাকে বলেন যে, শিশুটি তার কাছ থেকে কয়েক সপ্তাহ আগেই চলে গেছে।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কুইনলিং জেলার পুলিশকে জানায় শিশুটির মা সান্যামড ওয়াং। একই সঙ্গে তার স্বামীকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি। পরে এ নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে গুইয়াং-এর একটি হোটেলে জিয়াং-এর খোঁজ পাওয়া যায়। এর পরই জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে আসল সত্য।

জিজ্ঞাসাবাদে জুয়া খেলায় একটা বড় অঙ্কের ঋণের কথা স্বীকার করেন জিয়াং। তিনি বলেন, দেনা মেটাতেই অনলাইনে এক দম্পতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি, যারা তার মেয়েকে কিনে নেন।

কিন্তু ঝিজিয়া প্রদেশের জাউসান প্রদেশের ওই ক্রেতাদের সে সময় মিথ্যা বলেছিলেন জিয়াং। তিনি তাদের বলেছিলেন, সন্তানকে লালনপালন করার সামর্থ্য তার নেই। কারণ তিনি স্ত্রীর কাছ থেকে আলাদা থাকেন এবং তার বাবা-মা দুজনই মারা গিয়েছিলেন। এর পর ৫ নভেম্বর শিশুটিকে তার মায়ের কাছ থেকে ১ হাজার ৮৫০ কিলোমিটার দূরে জাউসানে নিয়ে যান তিনি।

তদন্তে গত শুক্রবার শিশুটির অবস্থান জানতে পারে পুলিশ। পরে তাকে উদ্ধার করে আবার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মানব পাচারের সন্দেহে শিশুটির বাবাকে আটক করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, চীনে শিশু অপহরণ ও পাচার দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর সামাজিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর জোরপূর্বক শ্রম, গ্রহণ বা পতিতাবৃত্তির জন্য প্রায় ৭০ হাজার শিশুকে অপহরণ করা হয়। গ্লোবাল টাইমসে উদ্ধৃত সুপ্রিম পিপলস কোর্টের মতে, ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে নারী ও শিশুদের অপহরণ ও পাচারের সঙ্গে জড়িত ২ হাজার ৮০৬টি মামলায় দেশটির আদালতে বিচার হয়েছিল।

Bootstrap Image Preview