প্রার্থনার সময় মানুষকে আক্রমণ করা অত্যন্ত বেদনার বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) জুমার নামাজের সময় মুসল্লিদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে পোস্ট করা বিবৃতিতে ট্রুডো বলেন, নিউজিল্যান্ডে আজ যে গুলির ঘটনা ঘটেছে তার কঠোর নিন্দা করছে কানাডা। হতাহত এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। নিউজিল্যান্ড এবং বিশ্ব মুসলিম জনগোষ্ঠীর মতোই আমরা আজ শোকাহত।’
এর আগে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘সব ধরনের চরমপন্থা ও এ জাতীয় কর্মকাণ্ডসহ বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ফ্রান্স দৃঢ়াবস্থানে। মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে এক হয়ে এসব সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেই কাজ করে থাকে ফ্রান্স।’
তারও আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে বলেন, ‘ভয়ঙ্কর এ হামলার ঘটনায় নিউজিল্যান্ডের জনগণের প্রতি আমি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।’
হামলাটিকে ‘বর্ণবাদী ও ফ্যাসিস্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করে টুইট বার্তায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেন, ‘দেশের পক্ষে আমি মুসলিম-বিশ্ব ও নিউজিল্যান্ডের জনগণের প্রতি শোক জানাই, যারা কিনা অত্যন্ত নিন্দনীয় এ কাণ্ডের শিকার হয়েছেন। (এটি) মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা বর্ণবাদ ও ইসলাম-বিদ্বেষেরই সর্বশেষ নজির।’
তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান আরও বলেন, ‘মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুতা অলসভাবে দেখছে বিশ্ব। এই মুসলিমদের যে ব্যক্তিগতভাবে হয়রানি করা হত, ক্রাইস্টচার্চের আল নুর মসজিদের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সীমান্ত ছাড়িয়ে তা গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। যদি এখনই এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া না হয় তাহলে আমাদের আরেকটি বিপর্যয়ের খবর শুনতে হবে।
মালয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এমন হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। আনোয়ার ইব্রাহিম বলের, ‘এমন হামলা বিশ্বশান্তি ও মানবতার ওপর এক কালো ছায়া।’
পাক প্রধানমন্ত্রী হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘সন্ত্রাসবাদ কখনো ধর্ম হতে পারে না।’
এ নিয়ে টুইটারে একটি বার্তা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। শুক্রবার (১৫ মার্চ) জুমার নামাজের পর ঘটনাটি ঘটলেও প্রায় ১১ ঘণ্টা পর টুইট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁসহ অনেক বিশ্বনেতার টুইটে ‘উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের’ কথা বলা হলেও ট্রাম্পের টুইটে এ ধরনের শব্দ পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, ‘মসজিদে ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের পর নিউজিল্যান্ডের জনগণের প্রতি আমার উষ্ণ সমবেদনা এবং শুভকামনা। ৪৯ জন নিরীহ মানুষ এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন (ঘটনায়) মারা গেলেন, আরও অনেকে গুরুতর আহত হলেন। নিউজিল্যান্ডের পাশে থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার সাধ্যের মধ্যে সম্ভব করবে। স্রষ্টা সবার সহায় হোন।’
প্রসঙ্গত, জুমার নামাজের পর মসজিদ দু’টিতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল নিয়ে চালানো ভয়াবহ এই হামলায় তিন বাংলাদেশিসহ অন্তত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আরও ৪৮ জন আহত হয়েছেন। গণহত্যা চালানোর আগে অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত এক শ্বেতাঙ্গ হামলাকারী অনলাইনে একটি পোস্ট করে জানায়, সে শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদে বিশ্বাসী। দখলদারদের (অভিবাসী) ওপর প্রতিশোধ নিতেই সে এই হামলা করেছে।