Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৬ শুক্রবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পাকিস্তান নিয়ে উভয় সংকটে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:১৬ PM
আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৪:১৬ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


কাশ্মীরের পুলওয়ামায় বৃহস্পতিবারের প্রাণঘাতী হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র দুটি দেশই উভয় সংকটে পড়েছে। কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পারমাণবিক অস্ত্রসমৃদ্ধ পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে কী করা যায়!

কূটনীতি, নিষেধাজ্ঞা, সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা-এসবের কোনোটিই কাজ করছে না। পুরোদমে যুদ্ধ অচিন্তনীয়। এমনকি দায় চাপানো ও হামলা ঠেকানোর ব্যর্থতা কেবল পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এবং তার গোয়েন্দা সংস্থাকে উসকে দিচ্ছে। এতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিদ্রোহীদের সমর্থনের নীতি অব্যাহত রেখেছে তারা।

ভারতীয় সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে হামলায় একটি আধাসামরিক বাহিনীর ৪৪ জওয়ান নিহত হয়েছেন। হামলাকারী বিদ্রোহী কাশ্মীরেরই যুবক। এতে ভারতীয় দমনপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে স্থানীয় বিদ্রোহীদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিরই প্রতিফলন ঘটেছে।

হামলার পর পরই জইশ-ই-মোহাম্মদ (জেইএম) হামলার দায় স্বীকার করেছে। পাকিস্তানে জেইএম নিষিদ্ধ হলেও সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর বলছে, জইশ-ই-মোহাম্মদ নেতা মাসুদ আজহারী পাকিস্তান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার মূলহোতাকে সোমবার হত্যার দাবি করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, তিনি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ও মাসুদ আজহারীর সংযোগী হিসেবে পরিচিত।

ভারতীয় সরকার বলছে, তাদের কাছে অকাট্য প্রমাণ আছে যে এ হামলায় পাকিস্তান সরাসরি জড়িত। ইসলামাবাদও বরাবরের মতো কৌশলী জবাব দিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান হামলার দায় অস্বীকার করে অঙ্গীকার করেছেন, এতে পাকিস্তান জড়িত বলে যদি ভারত কোনো প্রমাণ দিতে পারে, তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ভারতে অতীতের সন্ত্রাসী হামলার রেকর্ড বলছে, পাকিস্তানকে প্রমাণ সরবরাহ করলেও দেশটি কোনো ব্যবস্থা নেবে না। আফগানিস্তানে হামলার ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটছে। হাক্কানি নেটওয়ার্ক নামের তালেবানের একটি অংশ মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য পশ্চিমা লক্ষ্যবস্তুতে হামলায় পাকিস্তানের সমর্থন ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।

কাশ্মীরে ভারতের ওপর সুবিধা অর্জনে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্রোহীদের ব্যবহার করতে চেয়েছে পাকিস্তান। আফগানিস্তান থেকে সেনাপ্রত্যাহারে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

আগামী কয়েক মাস পরেই ভারতের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কাজেই এ হামলা মোদি সরকারের ওপর যেমন চাপ বাড়ছে, তেমনি জটিলতাও তৈরি করছে।

কাশ্মীর হামলার যথাযথ জবাব দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন নরেন্দ্র মোদি। অন্যান্য কর্মকর্তাও কঠিন ভাষা ব্যবহার করেছেন। তারা এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে কঠিন শিক্ষা দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন।

ভারতকে অন্তত কথা দিয়ে হলেও সমর্থন দিয়েছে হোয়াইট হাউস। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন ভারতীয় প্রতিপক্ষকে বলেছেন, নিজেকে রক্ষার অধিকার ভারতের আছে।

ভারত সামরিক অভিযানে গেলে তার পরিণতি হবে অকল্পনীয়। সে ক্ষেত্রে ভারতের বিকল্প একেবারেই সীমিত। মাসুদ আজহারীকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের তালিকায় রাখতে তারা জাতিসংঘে ফের আবেদন করতে পারে। অতীতে এমন উদ্যোগে ভেটো দিয়ে ব্যর্থ করে দিয়েছে পাকিস্তানের মিত্র চীন।

তবে তিক্ত হলেও মোদির জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, কাশ্মীরে দমন-পীড়ন বন্ধ করা। বিশেষ করে কাশ্মীরের মুসলমান ও ভারতের ভেতরে তাদের প্রতি সহানুভূতিশীলদের ওপর যে নির্যাতন চলছে, তা থেকে বিরত থাকা।

Bootstrap Image Preview