বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক জাতীয় কবি নজরুল ইসলামরে প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাঙালিত্বের শ্রেষ্ঠ প্রমাণ কবি নজরুল ইসলাম। তার সৃজনশীলতা ও বৈচিত্রতা বাংলা ও বাঙালি সাহিত্যর পূর্ণতা দান করেছে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে রবীন্দ্র-নজরুলের কূল পাওয়া আমাদের জন্য অসম্ভব। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষা এবং সাহিত্যের নব-রূপকার। নজরুল শ্রেষ্ঠ প্রকাশক। এই দুই মানুষ বাঙালি বিশ্ববিদ্যা সংস্কৃতি স্পর্শ করার পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘ভাষা ভাবনায় রবীন্দ্র-নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘জ্ঞানীর জন্য নতুন কিছু অবদান দেবার জন্য বাংলাদেশে জায়গাটা কমে গেলো। কারণ উচ্চশিক্ষার যে লক্ষ্য ও আদর্শ, তা আমাদের রাষ্ট্র অথবা যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করে তারা জানেন না। সেকেন্ডারি, হায়ার সেকেন্ড, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে যাদের তৈরি করা হয়েছে, তারা আমাদের অন্য সকলের থেকে আলাদা কিছু দিতে পারছে কি? তারা হয়তো (রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা) এটা বলবে যে, অন্যদের থেকে আলাদাভাবে কিছু অবদান রাখার প্রক্রিয়া করে দেয়ার মতো জায়গা বাংলাদেশে নেই।’
কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক তরুণদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তোমরা আমাদেরকে অতিক্রম করে এগিয়ে যাও, বুদ্ধুর মত বসে থেকো না। আমরা যদি হিমালয় হই, তেমরা এভারেস্টর চুড়া হও।’
এ সময় তিনি শৈশবকে স্মরণ করে বলেন, ‘প্রত্যেকটি মানুষের অভিজ্ঞতা স্বতন্ত্র এবং বিচিত্র এটি ঠিক। কিন্তু কারো কারো বৈচিত্রতা এমন যে ভাবা যায় না। আমি একটা সময় চোখ বন্ধ করে আমার শৈশবের কথা চিন্তা করি। তখন ভাবি শৈশবই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। শৈশবই আমাকে আমার বর্তমান তৈরি করে দিয়েছে। শৈশবই আমার ভাবনা আমার চিন্তা চেতনাকে প্রসারিত করেছে।’
আলোচনা সভার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম শাহিনুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহা, বাংলা একাডেমীর সাবেক মহাপরিচালক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ারের অধ্যাপক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।