বড় ছেলে মরেছে তো কি হয়েছে, পাকিস্তানকে শাস্তি দিতে ছোট ছেলেকেও সেনাবাহিনীতে পাঠাবো। কান্না জড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন, কাশ্মীর হামলায় নিহত সেনা জওয়ান রতন ঠাকুরের বাবা নিরঞ্জন ঠাকুর।
শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এক ভারতীয় গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি। নিহত রতন ঠাকুর ভাগলপুরের ঠাকুর পরিবারের ছেলে। সে সেনায় চাকরি পাওয়ার পরই কাশ্মীরে পোস্টিং পান।
বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কাশ্মীরের পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় সামরিক বহরে সিআরপিএফের বাসে আত্মঘাতী হামলায় দেশটির কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনীর (সিআরপিএফ) ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৪০ জনেরও বেশি। এ হামলার দায় ইতিমধ্যে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী জয়েশ-এ-মোহাম্মদ স্বীকার করেছে।
জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ তার দিকে শ্রীনগর থেকে ফোন আসে রতন ঠাকুরের বাড়িতে। এসময় তারা জানতে পারেন তার বড় ছেলে রতন ঠাকুর আর নেই। খবরটি পেয়ে কিছুটা থমকে যায় পরিবারের লোকজন। যখন তাদের স্তম্ভিত ফিরে তখন কান্না ভেঙে পড়েন রতনের স্ত্রী রাজনন্দিনী। রতনের বাবা নিরঞ্জন ঠাকুর নিশ্চুপ৷ শুধু চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল ৷ দু'চোখে প্রশ্নের উঁকি, এবার তাদের কী হবে?
এসময় শত কষ্টেও রতনের বাবা শিরদাঁড়া সোজা করে জানালেন, আমার ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে, মাতৃভূমির জন্য লড়েছে৷ আমার তো গর্ব হওয়া উচিত৷ ছেলেকে হারালাম তাই শুধু কষ্ট হচ্ছে৷ তবুও শপথ নিয়েছি, আমার ছোট ছেলেকেও সেনাবাহিনীতে পাঠাব৷ কারণ পাকিস্তানকে শাস্তি দিতেই হবে।
এ হামলার পর এক বিবৃতিতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, জঙ্গি হামলার যোগ্য জবাব দেবে ভারত।
এই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে তিনি বলেন, যারা যারা জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেবে না ভারত।
তিনি আরো জানান, আমরা দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, নিশ্চিন্ত থাকুন হামলার যোগ্য জবাব দেওয়া হবে।
হামলার ব্যাপারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর হামলার ঘটনা নিন্দনীয়। আমি এই ধরণের কারপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা করছি। আমাদের বীর নিরাপত্তাকর্মীদের বলিদান বিফলে যাবে না।বীর শহিদদের পাশে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে গোটা দেশ।আহতরা দ্রুত আরোগ্যলাভ করুন।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেছেন, সিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর এভাবে কাপুরুষোচিত হামলায় তিনি অত্যন্ত বিরক্ত। পুলওয়ামায় হামলা নিয়ে তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, শহিদদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।এমন হামলায় দেশটির সকল রাজনৈতিক নেতারা সরব হয়ে উঠেছেন। সকলে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।