শুরু হয়েছে বোরো চাষাবাদ। এখন মাঠের জমি প্রস্তুত ও চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-শ্রমিকরা। তবে বিদ্যুৎ নিয়ে এবছর কোন সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। অপরদিকে, লোকসান ঠেকাতে আগামী বোরো ক্রয় মৌসুমে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার দাবি জানান ডিলাররা।
দামুড়হুদার চিৎলা গ্রামের কৃষক আবুল কাশোম জানান, গভীর নলকূপ দিয়ে আমাদের চাষাবাদ করতে হয়। সবাই একসাথে জমি তৈরি করতে গিয়ে নলকূপের উপর কিছুটা চাপ পড়েছে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এই বছর কোন প্রকার বিদ্যুতের ভেলকিবাজী নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়মিত থাকলে ও প্রকৃতিক কোন দুর্যোগ না হলে ভালভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারব।
একই এলাকার বর্গা চাষী আব্দুস সালাম জানান, ডিএপি ১ বস্তা ১৩'শ টাকা, এমওপি ১ বস্তা ৮'শ টাকা, ইউরিয়া ১ বস্তা ৮'/শ টাকা, কীটনাশক ১১'শ টাকা, জমি চাষ ও রোপন ২ হাজার টাকা, পানি সেচ ১ হাজার ৫'শ টাকা এবং কাটা-মাড়াই প্রায় ২ হাজার টাকাসহ প্রায় ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা বিঘা প্রতি খরচ হয়ে থাকে। বিঘা প্রতি ফলন হয় ২০ থেকে ২৫ মণ।
বর্তমান বাজারে ৬২০ টাকা থেকে ৬৫০ টাকা দরে নতুন বোরো ধান বিক্রি হয়। যাদের নিজস্ব জমি তাদের কিছু থাকে। কিন্তু যারা আমার মত বর্গাচাষী তাদের কিছুই থাকে না। এতে করে প্রতিবছর আমাদের লোকসান গুনতে হয়। সরকার যদি সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনে তাহলে ন্যায্য দাম পাওয়া যাবে।
জেলায় চলতি মৌসুমে চাষিদের মধ্যে বোরো চাষের ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। শীতের প্রকোপ কিছুটা কম থাকায় কৃষকরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৩৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ৫'শ হেক্টর জমি বেশি আবাদ হবে বলে ধরা হচ্ছে। এর মধ্যে ব্রি-ধান ২৮, ব্রি-ধান ৫০, ব্রি-ধান ৬৫, ব্রি- ধান ৬৭, ব্রি- ধান ৫৮, ব্রি-ধান ৮১ সহ হাইব্রিড মিনিকেট ধান চাষ হচ্ছে।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিউর রহমান জানান, চলতি বছরের বোরো মৌসুমে ৪ শতাধিক কৃষককে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১ বিঘা জমি প্রতি সার, বীজ সহায়তা প্রদান এবং ৯৩ জন কৃষক/কৃষানীকে এনএডিবির আওতায় সার, বীজ বিতরণসহ বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রতিবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। এ মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। ফলে শীত এবং কুয়াশার প্রকোপ অনেক কম থাকায় বোরো ধানের চারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কম এবং চারাও সুস্থ সবল হয়েছে। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে তাহলে এবছরও বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন তারা।