ক্রমাগত দরপতনে লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে ঝিনাইদহের বাঁধাকপি কপিচাষীরা। প্রতি কেজি ২-৩ টাকায় বিক্রি করে তাদের উৎপাদন খরচই উঠছে না। ফলে তারা এখন আর বিক্রি না করে জমির অর্ধেক কপিই গরুকে খাওয়াচ্ছেন।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্য মতে, চলতি বছর ঝিনাইদহে বাঁধাকপি ও ফুলকপিসহ মোট সবজি আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে দারুণ। শুরুর দিকে এবার বাঁধাকপির দামও ভালো ছিল। কিন্তু এখন তা বিক্রি হচ্ছে নামমাত্র দামে।
ক্ষেত থেকে দুই-আড়াই কেজির প্রতিটি কপি বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ২-৩ টাকা দরে। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলার পাঁচটিকারি গ্রামের কৃষক খবির বিশ্বাস বলেন, এবার তিনি বাঁধাকপি চাষ করেছেন ১২ কাঠা জমিতে। যশোর থেকে প্রতিটি চারা কিনেছেন ১ টাকা দরে। ক্ষেতে চার হাজার কপি হয়েছে। সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরিসহ প্রতিটি কপি উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৭-৮ টাকা। কিন্তু এখন যে দামে কপি বিক্রি হচ্ছে, তাতে লোকসান নিশ্চিত।
একই গ্রামের কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, দুই সপ্তাহ আগে ১২ হাজার টাকায় ট্রাক ভাড়া করে দুই হাজার কপি ঢাকা নিয়ে যান, যা তিনি বিক্রি করেন ২০ হাজার টাকায়। এতে তার কোনো লাভ থাকেনি। বাধ্য হয়ে ক্ষেতের কপি এখন গরুকে খাওয়াচ্ছেন। একই দশা জেলার বাকি উপজেলা গুলোতেও। ভালো ফলনেও বাঁধা কপিতে কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পারছেন না।
কালীগঞ্জের কৃষক আরিফ হোসেন বলেন, ভালো ফলনের পরও লোকসান খুবই কষ্টকর।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জিএম আবদুর রউফ বলেন, সবজি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে কিংবা কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে কৃষকরা এ লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।