Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ইসলামে রোগীর মর্যাদা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৮ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:২৭ PM
আপডেট: ১৮ জানুয়ারী ২০১৯, ১২:২৭ PM

bdmorning Image Preview


রোগ বা অসুস্থতা আল্লাহপ্রদত্ত একটি বিষয়। এর মাধ্যমে আল্লাহ মুমিন বান্দাদের পরীক্ষা করে থাকেন। যেমন করেছিলেন নবী হজরত আইয়ুব আলাইহিস সালামকে। আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও অনেক সময় অসুস্থ হয়েছেন। যে কেউ অসুস্থ হলে প্রথমেই মনে করতে হবে এ রোগ একটি নেয়ামত হিসেবে আল্লাহতাআলা দান করেছেন। তিনিই এ থেকে শেফা দান করবেন। কারণ শেফা দানকারী একমাত্র তিনিই।

এ কথা যে মনে করবে এবং আল্লাহতাআলার প্রতি আরও মনোনিবেশ করবে, সে এ রোগের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সাব্যস্ত হবে এবং তার মনোবাঞ্ছাও পূরণ হবে। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত আনাস রাজি. বর্ণনা করেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক মৃত্যুশয্যায় শায়িত যুবকের কাছে প্রবেশ করে তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার কেমন লাগছে? সে উত্তর করল, হে আল্লাহর রাসুল, আল্লাহর রহমতের আশা রাখছি এবং গোনাহের কারণে শঙ্কিত আছি। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘কোনো বান্দার অন্তরে এমন অনুভূতি থাকলে তাকে তিনি তার কাক্সিক্ষত বস্তু প্রদান করেন এবং তার শঙ্কার বিষয় থেকে নিরাপত্তা দান করেন’ (তিরমিজি শরিফ)।

আর অসুস্থতা বান্দার গোনাহখাতা মাফের কারণে হয়। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রাজি. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘প্রত্যেক মুমিন বান্দার যে দুঃখ-যাতনা, রোগশোক বা দুঃশ্চিন্তা আসে তার কারণে তার গোনাহ মাফ করে দেওয়া হয়’ (মুসলিম শরিফ)।

অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত জাবের রাজি. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘কেয়ামতের দিবসে মানুষ কষ্ট-যাতনার সওয়াব দেখতে পেয়ে কামনা করবে যে, দুনিয়ায় যদি কেঁচি দিয়ে তার চামড়া কাটা হতো, তা হলে তার বিনিময়ে অনেক মর্যাদা পেত’ (তিরমিজি শরিফ)।

হাদিসে আছে, আল্লাহতাআলা বলবেন, ‘হে আদম সন্তান, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছে। তুমি তাকে দেখতে গেলে না? তুমি তাকে দেখতে গেলে আমাকে তার কাছে পেতে’ (মুসলিম শরিফ)।

আনাস রাজি. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় কষ্ট-যাতনা যত বড় হয় তার প্রতিদানও তত বড় হয় এবং আল্লাহ যখন কোনো দলকে ভালোবাসেন, তাদের দুঃখ-যাতনায় লিপ্ত করেন। অতএব যে এতে সন্তুষ্ট থাকে তার জন্যও আল্লাহ সন্তুষ্ট থাকেন। আর যে অসন্তুষ্ট হয় আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যান’ (তিরমিজি শরিফ)।

হজরত আবু হুরায়রা রাজি. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘আল্লাহতাআলা যার সঙ্গে কল্যাণ করতে চান তাকে রোগশোক দেন’ (মুসলিম শরিফ)।

এ ছাড়া হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাজি. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, কোনো মানুষ শারীরিকভাবে সমস্যাগ্রস্ত হলে আল্লাহতাআলা তাকে সংরক্ষণকারী ফেরেশতাদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আমার এই বান্দা যাকে আমি (অসুস্থতা দিয়ে) পাকড়াও করেছি তার আমলনামায় ওই পরিমাণ আমল লিখে রাখো, যে পরিমাণ আমল সে সুস্থাবস্থায় করত।

ইবনে আমর বলেন: একবার আমি আহলে বাইতের একজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং এ হাদিসটি তার কাছে বর্ণনা করলাম, তখন তিনি বললেন : ‘বরং নবী করিম সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সে যে পরিমাণ আমল সুস্থাবস্থায় করত তার আমলনামায় এরচেয়েও বেশি আমল লিখে রাখো’ (মুসনাদে আহমাদ)।

অন্য এক হাদিসে এসেছে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন, ‘কোনো মুসলিম রোগ বা অন্য কোনো কারণে যাতনাগ্রস্ত হলে আল্লাহপাক তার গোনাহ এমনভাবে ঝেড়ে দেন, যেমন গাছের পাতা ঝরে যায়’ (বোখারি শরিফ)।

Bootstrap Image Preview