বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব বিল নিয়ে এখনো উত্তাল ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন। কাশ্মীরের মতো পরিস্থিতি এড়াতেই আসামে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের বাস্তবায়ন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তবে বৈষম্যমূলক সংশোধিত নাগরিকত্ব এ বিলের বিরোধিতা করেছে মনিপুরের খোদ বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক দলগুলো।
ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব নির্ধারণ করে বিল পাসে তোপের মুখে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। বুধবার লোকসভায় নাগরিকত্ব বিল পাসের পর প্রতিদিনই আসামসহ বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন সংগঠন।
এমনকি মনিপুরে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের অন্য দলগুলোও তীব্র আপত্তি জানিয়েছে বৈষম্যমূলক সংশোধিত এই নাগরিকত্ব বিলের।
শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিতর্কিত এই আইন বাতিলে কেন্দ্র বিজেপির প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
নাগরিকত্ব বিল সংশোধনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এলাকার মানুষের অধিকার নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন মনিপুর কংগ্রেসের আইন প্রণেতারা। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে জরুরি অধিবেশন ডাকারও আহ্বান জানান তারা।
তবে সংশোধিত বিলের প্রতি সমর্থন জানিয়ে তা বাস্তবায়নের প্রতি জোর দিয়েছেন আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, আসামকে কখনোই কাশ্মীর হতে দেয়া হবেনা। সংশোধিত বিলটি শুধু আসামের জন্যই নয় বরং সমগ্র দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মানুষের অধিকার রক্ষা করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘আসামের মানুষের বোঝা উচিৎ, এই বিলটি শুধু আসামের জন্য নয়। আসামের শরণার্থী সংকট পুরো ভারতের জন্যই বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এই বিল পাস হলে আমরা ১৭টি সিট পুনরুদ্ধার করতে পারব। নিজেদের মঙ্গলের জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিৎ, আমরা কখনোই চাইনা আসামের অবস্থা কাশ্মীরের মতো হোক।’
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে আসন্ন লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলকে রাজ্য বিজেপি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তারা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করা ১ কোটি হিন্দু উদ্বাস্তুর কাছাকাছি পৌঁছানোর অংশ হিসেবেই তাদের এই তোড়জোড়।
তাছাড়া, বিজেপির বিরুদ্ধে বাঙালি বিরোধী দল বলে যে তকমা রয়েছে এর মাধ্যমে তা ঘোচানো সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তারা।