Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৭ শনিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্যারিসে লাখো মানুষের বিক্ষোভে পুলিশের হামলা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:২৫ PM
আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:২৫ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত ছবি


ফ্রান্সে জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চলমান বিক্ষোভ সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বিক্ষোভকারীদের ওপর স্টান গ্রেনেড, জল কামান ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে কমপক্ষে ১২২ জন বিক্ষোভকারীকে।

বিবিসি ও বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, তেলের মূল্য ও জীবন যাপনের খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্ষোভ করছেন দেশটির জনগণ। শনিবার প্যারিসের চ্যাম্পস এলিসি এভিনিউতে বিক্ষোভকারীদের ওপর এ হামলা চালায় পুলিশ। গত কয়েকে সপ্তাহজুড়ে হলুদ জ্যাকেট ও টুপি পড়ে প্যারিসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন লাখ লাখ মানুষ। 

সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জ্বালানি কর বৃদ্ধি করেছেন। ম্যাক্রোঁর দাবি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে জ্বালানি তেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এমনটা করেছেন তিনি। কিন্তু ক্ষুব্ধ নাগরিকরা তৃণমূল পর্যায় থেকে আন্দোলন শুরু করেছেন। বিক্ষোভকারীরা সড়ক পথগুলো অবরোধ করে ও তেলের ডিপোতে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে বিক্ষোভকারীদের বিষয়ে খানিকটা নমনীয় হলেও ম্যাক্রোঁ জানিয়ে দেন তিনি তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না। গত ১২ মাসে ফ্রান্সে ডিজেলের দাম ২৩ শতাংশ বাড়ানো হলে তার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ফ্রান্সে এখনো অনেক গাড়িতে ডিজেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ জানান, ম্যাকডোনাল্ডের মতো পরিবেশ দূষণকারী বড় বড় কোম্পানির উপর করারোপ করা উচিৎ। কারণ ফ্রান্সকে দূষিত করার জন্য তারাই সবচেয়ে বেশি দায়ী। কিন্তু সরকার তাদেরকে ছাড় দিয়ে সাধারণ মানুষের উপর উচ্চহারে করারোপ করছে। যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

সরকারের আর্থিক সংস্কার ও আবাসননীতির বিরোধিতা কোরে শুরু হওয়া আন্দোলন ক্রমেই সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নিচ্ছে। শনিবার প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর পদত্যাগ দাবি করেন বিক্ষুব্ধরা।

চলমান বিক্ষোভে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। একইসঙ্গে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে উস্কানি দেয়ার অভিযোগ তোলে ক্ষমতাসীন দল।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফি কাস্টনার বলেন, প্রায় এক লাখ মানুষ বিক্ষোভ অংশ নিয়েছেন। তার মধ্যে ৮ হাজার জন বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী। তারা বিক্ষোভে উস্কানি দিচ্ছে। আমরা জানি কীভাবে বিক্ষোভ দমন করতে হয়। দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিনন্দন।

বিক্ষোভের জন্য বিরোধীদের দায়ী করায় ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অসততার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দল কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল র‌্যালি পার্টির প্রধান ম্যারি ল্যঁ পেন।

একই দাবিতে, গেলো সপ্তাহে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে প্রায় তিন লাখ ফরাসি অংশ নেন। শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেন লক্ষাধিক মানুষ। এ অবস্থায় বিক্ষোভ উস্কে দেয়ার জন্য বিরোধীদের দায়ী করা হলেও পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিক্ষোভে অংশ নেয়া অধিকাংশ ফরাসি এক সময় প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সমর্থক ছিলেন। ম্যাক্রোঁ তার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে জনসাধারণে ক্ষোভ বাড়ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।

Bootstrap Image Preview