Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৬ সোমবার, মে ২০২৪ | ২২ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর হত্যাকারী শীর্ষ সন্ত্রাসী ফারুক গ্রেপ্তার

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ এপ্রিল ২০২১, ০৭:৪২ PM আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২১, ০৭:৪২ PM

bdmorning Image Preview


আশি-নব্বই দশকের বাংলা সিনেমার সাড়া জাগানো চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। ক্যারিয়ারের সোনালী সময়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সোহেল চৌধুরীসহ কয়েকটি হত্যা মামলার আসামি কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার ভাওরখোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, শীর্ষ সন্ত্রাসী ফারুক সরকার আব্বাসীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গেলো বুধবার (৩১ মার্চ) বিকেলে ঢাকার হাজারীবাগ থানার পূর্ব রায়েরবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) মেঘনা থানা পুলিশ ও কুমিল্লা ডিবির তত্ববধানে তাকে কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করা হবে।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহরিয়ার মোহাম্মদ মিয়াজী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, 'আমাদের কাছে তথ্য ছিল দুটি মামলায় ওই চেয়ারম্যান উচ্চ আদালত থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিনে রয়েছেন। তবে বাদীপক্ষ ওই জামিন বাতিলের জন্য আপিল করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই চেয়ারম্যানের অস্ত্র মামলার আগাম জামিন আপিল বিভাগ স্থগিত করেছেন বলে আমরা জেনেছি। এরপর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য গত দু’দিন আমরা তাকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখি। বুধবার নিশ্চিত হই, অস্ত্র মামলায় তাকে উচ্চ আদালতের দেওয়া আগাম জামিনটি স্থগিত করা হয়েছে। এরপর অভিযান চালিয়ে তাকে বুধবার বিকেলে ঢাকার হাজারীবাগ থানার পূর্ব রায়েরবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।'

তিনি আরও জানান, চেয়ারম্যান আব্বাসী বর্তমানে তাদের হেফাজতে রয়েছেন। আজ (১ এপ্রিল) তাকে কুমিল্লার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। এছাড়া তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

এদিকে কুমিল্লার মেঘনা থানার ওসি আব্দুল মজিদ বলেন, 'শীর্ষ সন্ত্রাসী ফারুক আব্বাসির বিরুদ্ধে মেঘনা থানায় দুটি হত্যা মামলাসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। কুমিল্লা ডিবি পুলিশ অন মেঘনা থানার পুলিশ যৌথ অভিযানে তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।'

প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার দিনই নিহত সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় আদনান সিদ্দিকীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী আসামি আদনান সিদ্দিকীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে ফারুক আব্বাসী ছাড়া অপর আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন।

এদিকে গত ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে আব্বাসীর সঙ্গে বিরোধ চলছিল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম সিরাজের। এর জেরে ১৯ ফেব্রুয়ারি ভাওরখোলা গ্রামে আব্বাসীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সিরাজ ও তার ভাই আবদুস সালামের ঘরে হামলা চালিয়ে ৬ জনকে কুপিয়ে আহত করে। এর মধ্যে মারা যান সালামের স্ত্রী নাজমা বেগম। এ ঘটনার পরদিন ফারুক আব্বাসীকে প্রধান আসামি করে ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের দেবর সিরাজুল ইসলাম।

ওই হত্যাকাণ্ডের দিন ফারুক আব্বাসীর বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তাকে প্রধান আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। বুধবার (৩১ মার্চ) ওই অস্ত্র মামলায় কুমিল্লা জেলা ও মেঘনা থানা পুলিশের সদস্যরা ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন।

Bootstrap Image Preview