বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি পরিচালক আমজাদ হোসেন ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভক্তদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। ভক্তরা ফুল হাতে তার মরদেহ শেষবারের মতো দেখতে শহীদ মিনারে ভিড় করেছিলেন।

শনিবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় ভক্ত ও সহকর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয় আমজাদ হোসেনের মরদেহ। আর এ সময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভক্তরা ফুল দিয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। তার এই শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

শহীদ মিনারে আমজাদ হোসেনের ছেলে সোহেল আরমান বলেন, ‘বাবা ছিলেন,বাবা আছেন এবং সবসময়ই থাকবেন। বাবাকে আপনারা এতো ভালোবাসেন তা কফিনের ওপরে ফুল দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বাবা দেখে যেতে না পারলেও আমি দেখতে পাচ্ছি বাবার প্রতি আপনাদের ভালোবাসা।’

তিনি বলেন, ‘আমি পরিবারের পক্ষ থেকে আমার বাবার জন্য শুধু দোয়া চাই। আপনারা বাবার জন্য দোয়া করবেন,আমাদের পরিবারের জন্য দোয়া করবেন,যাতে আমরা বাবার আদর্শ নিয়ে চলতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাবা বাংলাদেশের মানুষকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি সবসময় সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করতেন। কখনো অহংকার করেননি। আমি চাই আপনারা বাবার জন্য সব সময় দোয়া করবেন।’

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) মারা যান বরেণ্য চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আমজাদ হোসেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। এক সপ্তাহ পর গতকাল শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তার মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। প্রথমে আদাবরের বায়তুল আমান মসজিদে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে তার মরদেহ রাখা হয়েছিল।

১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট জামালপুরে জন্ম নেয়া আমজাদ হোসেন চিত্র পরিচালনার বাইরে লেখক,গীতিকার,অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। গান লেখা,চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়া সরকার তাকে একুশে পদকেও ভূষিত করেন।

‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে ১৯৬১ সালে রূপালি পর্দায় তার অভিষেক হয়। পরে চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় তিনি বেশি সময় দেন। ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘খেলা’।