Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৮ রবিবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সেই ফারদিনের অনেক ‘না জানা কথা’ বন্ধুর স্ট্যাটাসে

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১ নভেম্বর ২০২২, ১২:১১ PM
আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২২, ১২:১১ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


রাজধানীর রামপুরা থেকে নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর উদ্ধারকৃত বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মৃত্যু নিয়ে তৎপর প্রশাসন, সেই সঙ্গে আলোচনায় মত্ত গোটা দেশ। একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। ফারদিনের মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে তাঁর পরিবার সহ বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীদের মাঝে। সকলেই ফারদিনের মৃত্যুর সংবাদে গভীর শোক জানাচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে ফারদিনের মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা।

ফারদিন পরশের মৃত্যুতে তাঁর কাছের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক জানিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন। বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) ফারদিনের এক শুভাকাঙ্খী ও বন্ধু ফারদিনের স্মৃতিচারণ করে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফেসবুকে। তাঁর নাম সাজ্জাদ হোসেন। সাজ্জাদ রুয়েটের একজন ছাত্র। পরশের সাথে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ছিল তাঁর। সাজ্জাদের স্ট্যাটাসে ওঠে এসেছে ফারদিনের সম্পর্কে আবেগপ্রবন কিছু শব্দ। ওঠে এসেছে ফারদিন সম্পর্কে অনেক না জানা কথা।

সাজ্জাদ হোসেন নিজের স্ট্যাটাসে ফারদিনকে অন্যদের চেয়ে আলাদা উল্লেখ করে লেখেন, ‘ফারদিন পরশ বরাবরই ছিল মেধাবী একজন ছাত্র। ছোটবেলা থেকেই পরশ ছিল আলাদা। বুক শেলফ ভর্তি বই ছিল তাঁর। এক বই দুই-তিনবার করেও পড়ত পরশ। বাড়ির পত্রিকাগুলোও একাধিকবার পড়ত। গণিত ও পদার্থবিদ্যায় পরশ অন্যরকম আনন্দ পেত। সিভিলের ছাত্র হয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের একটা কোর্স পড়েছে পরশ। গনিতে তাঁর মেধা ছিল অনন্য। পড়ার সময় ক্যালকুলেটর প্রয়োজন হতো না পরশের। ’

ফারদিন পরশের বিনম্রতা সম্পর্কে সাজ্জাদ লেখেন, ‘পরশ ছিল অত্যন্ত নম্র একজন মানুষ। পরশকে তাঁর ছোট ভাইদের সাথে দুই একবার চিৎকার করতে দেখেছি সেই ছোট বয়সে। এছাড়া কখনো কোনো উচ্চবাচ্যের রেকর্ড তাঁর নেই। রিকশাওয়ালদের ভাড়া দেওয়া শেষে সে সবসময় বলতো, ‘ধন্যবাদ’। সে ছিল নিরহংকারী। শেখার চেষ্টা করত সবসময়। ছিল একজন মনোযোগী শ্রোতা।

সাজ্জাদ তাঁর স্ট্যাটাসে আরো উল্লেখ করেছেন, ‘নারীদের প্রতি পরশের শ্রদ্ধা ছিল অনুকরণীয়। পরশের নারীঘটিত কোনো ঝামেলা কারো সাথে থাকার কথা নয়। সে বই পড়ে, ডিবেট করে, সোশ্যাল ওয়ার্ক করে এবং তাঁর মতো মানুষদের সাথে বন্ধুত্ব করে। ’

ফারদিন পরশের পরিবার সম্পর্কে সাজ্জাদ লেখেন, ‘পরশের পরিবার একটা টিপিক্যাল টানাপোড়েনের পরিবার। কিন্তু অত্যন্ত ভদ্র ও শিক্ষিত পরিবার। যে পরিবারে ঘরে খাবার না থাকলেও বইয়ের অভাব হয় না। কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করার রেকর্ড তাঁর পরিবারের কারো নেই। পারিবারিক শত্রুতা নেই। পরশের কাজ ছিলো শুধু ডিবেট, টিউশনি, পড়াশুনা, ল্যাপটপের দু'একটি গেম ও খাওয়াদাওয়া। ’ তাঁর কোনো শত্রু থাকতে পারে না বলেও উল্লেখ করেন সাজ্জাদ।

প্রসঙ্গত, গত ৪ নভেম্বর রাত ১১ টার দিকে রাজধানীর রামপুরা থেকে নিখোঁজ হয় বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ। এর তিনদিন পর গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরশের মৃতদেহ উদ্ধারের পরপরই সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে তাঁর মৃত্যু নিয়ে। এরপর বুধবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় রাজধানীর রামপুরা থানায় ফারদিন পরশের বাবা নূর উদ্দিন রানা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় ফারদিনের বান্ধবী আয়াতুল্লাহ বুশরার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে রামপুরার একটি বাসা থেকে বুশরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরশের স্মৃতিচারণ করে দেওয়া সাজ্জাদের সেই স্ট্যাটাসটি :

 

Bootstrap Image Preview