পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এমন প্রেক্ষাপটে সতর্ক অবস্থায় আছে বাংলাদেশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের যে এলাকা থেকে এসেছে, আমরা প্রায় মাসখানেক ধরে সেই এলাকার পরিস্থিতি লক্ষ করছি।
২০ ও ২৮ আগস্ট নিশ্চিতভাবে দুটি ঘটনা ঘটেছে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দ্বের ঘটনায় মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমানায় এসে পড়েছিল। এর পরই মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমাদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে। ’
মিয়ানমার এর আগেও উসকানি দিয়েছে, সেটি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী কী ভাবছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে কোনো চাপ এলেই মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখা যায়। আমরা মিয়ানমারের উসকানির ফাঁদে পা দিতে চাই না। রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ যে সমস্যায় আছে, সেটির একটি দায় চাপিয়ে দেওয়ার জন্যও এমনটা হতে পারে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কেউ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাইলে আমরা গ্রেপ্তার করে ফেরত পাঠিয়েছি। ’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অবনতি হয়েছে, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। এটা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। এতে যেন বাংলাদেশে কোনো প্রভাব না পড়ে, সেদিকে লক্ষ রাখছি। ’
অনেকেই শঙ্কায় আছেন, সেখানে বাকি যে রোহিঙ্গারা আছে, বাংলাদেশে তারা চলে আসবে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মানবতার দৃষ্টিকোণ থেকে ২০১৬-১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আসতে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সজাগ। বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একজনও মিয়ানমারের নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে। আর মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম অংশে (বাংলাদেশের বান্দারবনের আলীকদম সীমান্তে) অভ্যন্তরীণ সমস্যা চলছে। কিন্তু রোহিঙ্গারা এখন আছে পূর্ব দিকে। সুতরাং এই অংশ ক্রস করে তাদের বাংলাদেশে ঢোকার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত আছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনী এ বিষয় নিশ্চিত করবে। ’
রোহিঙ্গারা ফিরে যাওয়ার অগ্রগতির বিষয়ে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভার্চুয়াল মাধ্যমে দুই দফা মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। মিয়ানমারও বাংলাদেশের সঙ্গে একটি বৈঠক করতে চায়। সেটি সামনাসামনিও হতে পারে। এটার অগ্রগতি সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে।
এর আগে গতকাল দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমার আগামী দিনে সতর্ক অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছে।