Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ২৯ সোমবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

পরকীয়ার জের ধরেই ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে মিতুকে হত্যা করেন বাবুল

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৪ আগস্ট ২০২২, ০২:০৭ PM
আপডেট: ২৪ আগস্ট ২০২২, ০২:০৭ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


পরকীয়ার জের ধরেই ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে মিতুকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে উঠে এসেছে।চট্টগ্রামে মিতু হত্যা মামলায় স্বামী বাবুল আকতারকে মূল পরিকল্পনাকারী এবং সোর্স মুছাকে কিলিং মিশনের প্রধান হিসেবে চিহ্নিতের পাশাপাশি সাতজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট চূড়ান্ত করেছে পিবিআই।সরকার নিয়োজিত কৌঁসুলির অনুমোদন পাওয়ায় কয়েক দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন পিবিআই কর্মকর্তারা।


জানা গেছে, আড়াই বছরের তদন্ত শেষে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যার জন্য তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারকেই মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থের জোগানদাতা হিসাবে চিহ্নিত করেছে পিবিআই। শেষ পর্যন্ত নিজের দায়ের করা মামলাতেই অভিযুক্ত হলেন সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা। এ ছাড়া কিলিং মিশনের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বাবুল আকতারের সোর্স কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা, খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু, আবদুল মোতালেব ওরফে ওয়াসিম, শাহজাহান মিয়া এবং আনোয়ার হোসেন। আর এহতেশামুল হক ওরফে ভোলাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহের জন্য। 

চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চল পিবিআই পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততা পেয়েছি মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে। বাবুলের কথায় মুসা মার্ডারের পরিকল্পনা করেছে, অস্ত্র ও মোটরসাইকেলে এনেছে। এখানে আর্থিক লেনদেনের সম্পৃক্ততাও পাওয়া যায়। এ ছাড়া তদন্তে বাবুল আক্তারের জীবনের একটা অংশ পেয়েছি; যার কারণে মিতুর সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ কারণেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।  নূরন্নবী এবং রাশেদ নামে আরও দুজনের হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া গেলেও দুজনই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় চার্জশিট থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাবুল আকতারসহ পাঁচজন কারাগারে থাকলেও পলাতক দেখানো হয়েছে মুসা এবং কালুকে।


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে বাবুল আকতার কক্সবাজার জেলায় দায়িত্ব পালনের সময় গায়ত্রী অমর সিং নামে বিদেশি এনজিও কর্মকর্তার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। পরে মিতু এ ঘটনা জানতে পারলে দুজনের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধের একপর্যায়ে বাবুল আকতার তার বিশ্বস্ত সোর্স মুসার মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করেছে বলে তথ্য উদ্‌ঘাটন করেছে পিবিআই। অবশ্য স্ত্রী হত্যায় বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততা তুলে ধরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল তিন আসামি ভোলা-ওয়াসিম এবং আনোয়ার।


মিতু হত্যা মামলা তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মো. ওমর ফারুক বলেন, বাবুল আকতারের পরকীয়া প্রেমের সম্পৃক্ততার কারণেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। মুসা ও তার সহযোগীরা এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে।
চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে থাকছে মোট ৯৭ জন। চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে আদালতে চার্জশিট দেয়ার আগে মেমো অব অ্যাভিডেন্সের অনুমোদন দিয়েছে সরকার নিয়োজিত কৌঁসুলি। পর্যালোচনা শেষে নিজের মতামতসহ সোমবার রাতে মহানগর পিপিএমই অনুমোদন দেন বলে জানান চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন আহমেদ।


তিনি বলেন, আশা করি যে তদন্ত হয়েছে- এর যে চার্জশিট দেয়া হবে। এ চার্জশিট দেয়ার পরই আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে আমরা অভিযোগ প্রমাণ করতে পারব।
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় নগরীর জিইসি মোড়ে দুষ্কৃতকারীদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন গৃহবধূ মাহমুদা খানম মিতু। পর দিন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আকতার নিজে। কিন্তু পিবিআইয়ের তদন্তে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে ২০২১ সালের ১২ মে পিবিআই বাবুল আকতারকে গ্রেফতার করে।

Bootstrap Image Preview