এক সপ্তাহের মধ্যে দুইবার পানি আইলো। কাল থাইকা আবার পানি ওঠছে। মানুষ পানি দেহেয়ন লাইগা আয়ে। আমগোরে কেউ দেহে না। বলছেন শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়নের পূর্ব শিমুলকুচি গ্রামের গৃহবধূ সালেহা বেগম।তিনি বলেন, ‘সহালে পানি ঘরের মধ্যে আইছে। হাড়িপাতিল পানিতে ভাইসা গেছে। চুলার মধ্যেও পানি। কেমনে রান্না করুম? কাল থাইকা পোলাপান লইয়া মুড়ি খাইয়া আছি। ’
তাঁর প্রতিবেশী সাথী আক্তার বলেন, ‘পানির স্রোত আইয়া ঘরের পিড়া ভাঙছে। ঘরডাও ভাঙবো। কই থাহুম?’বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে বেড়ে গেছে নদীর পানি। এতে প্লাবিত হয়েছে শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার প্রায় অর্ধশত গ্রাম। ডুবে যায় রাস্তাঘাটসহ বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে বিভিন্ন এলাকা। ঢলের পানিতে ভেসে যায় পুকুরের মাছ। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। তবে আজ ঢলের পানি উজানে কমলেও বাড়ছে নিম্নাঞ্চলে।
স্থানীয়রা জানায়, ভারত থেকে নেমে আসা সোমেশ্বরী নদীতে প্রতি বছর দেখা দেয় পাহাড়ি ঢল। এর কারণে ভেঙে পড়ে সোমেশ্বরী নদীর দুই পাড়। পাহাড়ি ঢল এলেই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয় শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এবার গত ৯ জুন আকষ্মিক পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে ফসলি জমিসহ ঘর-বাড়ি। দ্বিতীয়বার ঢল নামে বৃহস্পতিবার রাতে। দুই দফা পাহাড়ি ঢলে বেরী বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আয়নাপুর বাজারসহ কয়েকটি গ্রাম।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, বেরী বাঁধটি সংস্কার হয়নি। এ জন্য ভাটি এলাকার শতশত মানুষ নদী ভাঙনের আশংকা করছেন। দ্রুত বাঁধ সংস্কার করা না হলে বড় বিপদ হতে পারে। এলজিইডির ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। ’ এদিকে শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা আক্তার বলেন, ‘বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে চাল, শুকনা খাবার ও নগদ টাকা দেওয়া হচ্ছে। ’