Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৬ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিশ্বের যেকোনো দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রস্তুত বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২২, ০১:৫১ PM
আপডেট: ২৯ মে ২০২২, ০১:৫১ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


বাংলাদেশ বিশ্বের যেকোনো দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানান, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হলো, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।

রোববার (২৯ মে) সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় এবং আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেন সরকারপ্রধান।

শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেওয়া মহৎ কাজ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের শান্তির জন্য কাজ করে শান্তিররক্ষীরা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। এ সময় তিনি সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেওয়া সদস্যদের প্রতি নির্দেশনা দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকের ভেতরে একটি মানবিক গুণ আছে, যে গুণটি দিয়ে শুধু শান্তিরক্ষাই নয়, মানবিক কাজও আমাদের শান্তিরক্ষা মিশনের সদস্যরা করে থাকেন। তারা বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল করছেন। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শান্তিরক্ষীরা ৩৪টি দেশে ৫৫টি মিশন সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে ৯টি মিশনে আমাদের শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কিছু উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বিভিন্ন মিশনে ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার এবং সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দাযিত্ব পালন করছেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা বর্তমানে জাতিসংঘের পিস-বিল্ডিং কমিশনের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য সহযোগী শান্তিরক্ষীদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে সংঘাতপূর্ণ দেশগুলোতে শান্তি ফিরিয়ে এনে আপনারা ওইসব দেশের জনগণের অকুণ্ঠ ভালোবাসা, আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করেছেন। আমাদের শান্তিরক্ষীদের একটা বিশেষ গুণাবলী হলো, শুধুমাত্র শান্তিরক্ষার দায়িত্ব পালন করেন না, অনেক সামাজিক দায়িত্বও আপনারা পালন করেন।

শান্তিরক্ষা মিশনে শহীদদের স্মরণ এবং তাদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি জানি আপনজন হারানোর বেদনা কত কঠিন, কত নির্মম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আমাদের সর্বমোট ১৬১ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন। এর মধ্যে গত এপ্রিল পর্যন্ত বিগত এক বছরে দুইজন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন। এ বছর দুইজন শহীদ শান্তিরক্ষী পরিবার এবং ১৪ জন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা প্রদান করা হলো। আমি তাদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি।

সরকারপ্রধান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাঙালি জাতিরই নন, তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের মুক্তির ও শান্তির দূত। এজন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ তাকে জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণে বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- এই নীতি বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন। যে নীতি এখনও আমরা মেনে চলি। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি করার দিকে মনোনিবেশ করেছি।

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে। বিশেষ এ দিনে শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নিয়েছে রাষ্ট্রীয় নানা কর্মসূচি। ভোরে শান্তিরক্ষীদের স্মরণে শুরু হয় দিনের প্রথম কর্মসূচি ‘শান্তিরক্ষী দৌড়’। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। পরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের সংবর্ধনা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া দুপুরে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে জাতিসংঘ শান্তি মিশন নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

Bootstrap Image Preview