Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৫ বুধবার, মে ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ এপ্রিল ২০২২, ০৫:৩২ PM
আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২২, ০৫:৩২ PM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন বলছে, ব্যাপক অর্থে তাদের 'দায়মুক্তি' দেয়া হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাহিনীর দুর্নীতি, নির্যাতন ও হত্যার মতো ঘটনায় তদন্ত এবং অপরাধীদের বিচারের সম্মুখীন করেছে সরকার। বিশ্বের ১৯০টি দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের তৈরি করা বাৎসরিক রিপোর্টে এ দাবি করা হয়েছে।

২০২১ সালের বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির মূল্যায়নে তৈরি হয়েছে  '২০২১: কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্যাকটিসেস'। ওই প্রতিবদনের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারটি ৭৪ পৃষ্ঠার। রিপোর্টের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের এক্সিকিউটিভ সামারিতে বলা হয়েছে- সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে সংসদীয় পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা বহাল, যেখানে ক্ষমতা মূলত কেন্দ্রীভূত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়ে আরও পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছে।

তবে ওই নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি, বাক্সভর্তি জাল ভোট, বিরোধী পোলিং এজেন্ট ও ভোটারদের ভয় দেখানোসহ অনিয়মের নানা অভিযোগ ছিল।  ফলে পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনটিকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে স্বীকৃতি দেননি। মার্কিন রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে পুলিশ, বর্ডার গার্ড এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের মতো সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটগুলোকে নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী গঠিত হয়েছে, যা অভ্যন্তরীণ ও সীমান্ত নিরাপত্তায় নিয়োজিত। দেশটির সেনাবাহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনী জাতীয় প্রতিরক্ষার দায়িত্বে, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারা অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করেন।

বাংলাদেশে বেসামরিক নেতৃত্ব নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর কার্যকর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন উল্লেখ করে মার্কিন রিপোর্টে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ করা হয়। তবে ওই রিপোর্ট বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের তরফে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা রাতে মানবজমিনকে ক্ষুদে বার্তায় বলেন, বুধবার রিপোর্টটি পর্যালোচনা হবে এবং সরকারের তরফে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে।  মার্কিন রিপোর্টের সামারিতে ক্যাটাগরিক্যালি মানবাধিকার লঙ্ঘনের কিছু অভিযোগ তোলা হয়। দাবি করা হয়, উত্থাপিত কিছু অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য প্রতিবেদন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রয়েছে।

যার মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, সরকারি এজেন্টদের দ্বারা নিষ্ঠুর এবং অবমাননাকর আচরণ, নির্যাতন, মামলা;  প্রাণনাশেন হুমকি;  নির্বিচারে আটক;  রাজনৈতিক কারণে বন্দি করা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিশোধ;  বিচার বিভাগকে চাপে রাখা, স্বেচ্ছাচারী বা বেআইনী হস্তক্ষেপ;  একজনের অপরাধে পরিবারের অন্য সদস্যকে হয়রানী; সাংবাদিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, অযৌক্তিক গ্রেপ্তার, সেন্সরশিপ আরোপসহ মতপ্রকাশ এবং মিডিয়ার উপর গুরুতর বিধিনিষেধ;  ইন্টারনেট ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা;  শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা উল্লেখযোগ্য। তাছাড়া লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা, তদন্ত এবং জবাবদিহিতার অভাব, যৌন সহিংসতা, শিশু নির্যাতন, বাল্য ও জোরপূর্বক বিবাহসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের আরও কিছু অভিযোগ করা হয়। রিপোর্টে জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী বা আদিবাসীদের লক্ষ্য করে সহিংসতার হুমকি;  লেসবিয়ান, সমকামী, ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার সুরক্ষার পথে প্রতিবন্ধক আইনের অস্তিত্ব বা ব্যবহার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ট্রেড ইউনিয়ন এবং শ্রমিকদের সংগঠনের স্বাধীনতার উপর বিধিনিষেধ এবং শিশুশ্রমের মারাত্মক রূপের অস্তিত্ব থাকার বিষয়টি মানবাধিকার রিপোর্টে উদ্বেগের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়।

Bootstrap Image Preview