৯০ দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন রোববার এ আদেশ দেন। পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য দুই আসামি হলেন, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান।
রোববার এই মামলায় সাক্ষ্য শুরুর দিন ছিল। তবে রাষ্ট্রপক্ষে কোনো সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় এবং কারাগারে থাকা দুই আসামিকে হাজির না করায় আদালত সাক্ষ্য নেয়ার জন্য আগামী ২৪ মার্চ তারিখ দেয় আদালত।
একইসঙ্গে জামিনে থাকা তিন আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।
সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সাদিয়া আফরিন শিল্পী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বলেন, ‘এই মামলায় আজ সাক্ষ্য নেয়ার দিন ছিল। আসামিদের মধ্যে তারিক সাঈদ মামুনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অপর দুই আসামি হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন কারাগারে থাকলেও হাজির করা হয়নি। এ ছাড়া জামিনে থাকা দুই আসামি আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী আদালতে হাজির ছিলেন। বাকি দুই আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী শুরু থেকেই পতালক।’
উচ্চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন এ মামলার বিচার কাজ স্থগিত ছিল। ২০১৫ সালে এই মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। প্রত্যাহারের সেই আদেশসহ মামলার নথি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আসে।
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী বিয়ে করেন ওই সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতিকে। বিয়ের কিছু দিন পর তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ওই সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সোহেল চৌধুরী। জড়িয়ে পড়েন নেশার জগতে। সেই অন্ধকার জগতের অপরাধীদের সঙ্গে শুরু হয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই খুন হন সোহেল চৌধুরী।
বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
অভিযোগপত্রে কাদের নাম
আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
ওই বছরই আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আবেদন আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল।