তবে কী এবারের শিল্পী সমিতি নির্বাচনটি নিপুণ বনাম জায়েদকে ঘিরেই হয়েছে? অবস্থাদৃষ্টে তাই মনে হচ্ছে। ২৮ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগে থেকেই যে পরস্পরের দ্বন্দ্ব চলমান তা একইভাবে বহাল আছে। এদিকে জায়েদ খান যেমন অভিযোগ করছেন। ঠিক একইভাবে নিপুণও অভিযোগের আঙুল তুলছেন জায়েদের দিকে। তারা দুজনই সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থিতা নিয়ে লড়ছেন। কিন্তু বিগত শিল্পী সমিতির ইতিহাসে এইরকম বৈরিতা আর দেখা যায়নি।
জায়েদ অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, ‘আদালত অবমাননা করেছেন নিপুণ।’ তিনি আরো বলেন, ‘আজ আদালতের যে রায় হয়, সেটিই আমরা মেনে নিবো। কিন্তু আদালত স্টে অর্ডার দেবার পরও কেন নিপুণ শিল্পী সমিতির চেয়ারে বসবেন। এছাড়াও অভিযোগ করে বলেছেন শিল্পী সমিতির সিনিয়র ৩ জন শিল্পীর ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এই শিল্পী সমিতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নানানভাবে অবদান রয়েছে চিত্রনায়ক সোহেল রানা, ফারুক ও উজ্জ্বল ভাইয়ের। তাদের ছবি সরানো হয়েছে। কোনো ছবি সরানোর ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সকলের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত হতে হয়।’
অন্যদিকে ছবি সরানোর বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য দেননি। তবে নিপুণ বলেন, ‘আইনের প্রতি আমরা বরাবরই শ্রদ্ধাশীল। আর কথায় কথায় মামলার ভয় দেখাই না আমি। তবে আমার বিরুদ্ধে লোক লাগিয়ে ফেসবুকে ভুয়া তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, এগুলো অন্যায়।’
চলচ্চিত্রের এই দুই শিল্পীর সম্পর্কের অবস্থান যখন এমন তখন আজকের রায়ের পরে কী আদৌ সম্মিলিত একটি কমিটি দুই প্যানেল থেকে হবে কী না, তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।
কারণ এর মধ্যে চিত্রনায়িকা রোজিনা ও রুবেল পদত্যাগের কথা বললেও তারা নিজেদের পদত্যাগের বিষয়টি প্রত্যাহার করেছেন।
বরেণ্য অভিনেতা-নির্মাতা প্রযোজক সোহেল রানা বলেন, ‘বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান দরকার। এখানে তো আমরা কেউ ঝগড়া করতে আসিনি। পরস্পর বসে একটা সমাধানে আসা উচিত। আর ছবি সরানোর বিষয়টা যদি সত্যিই হয় তবে তা খুবই দুঃখজনক। আমি চাই মাননীয় আদালতের রায় শেষে সকলে একসাথে বসে একটা মীমাংসা হোক নিজেদের ভেতরে। নয়ত প্রথমে বলা হলো ১৮ সংগঠন জায়েদকে বয়কট করেছে। পরে জানলাম, কোনো অফিশিয়াল স্টেটমেন্ট কেউই দেয়নি। তবে কেন এমন বিভ্রান্তি? আমার মনে হয়, যা হবার হয়েছে, এখন সব ভুলে একটা দারুণ মীমাংসা করে দেশবাসীর কাছে যেন একটা ভাল উদাহরণ হয়ে থাকে তার ব্যবস্থা করা উচিত। নয়ত শিল্পী পরিবার অপমানিত হচ্ছে দিনকে দিন।’
চিত্রনায়ক রুবেল বলেন, ‘ছবি সরানোর বিষয়টি যদি সত্যিই হয় তবে তার প্রতিবাদ আমি করবোই। অসম্মান কেন করা হবে? আমি পদত্যাগের বিষয়টি প্রত্যাহার করেছি। যা সিদ্ধান্ত হবে আমরা বিজয়ী ১১ জন একসাথেই সিদ্ধান্ত নেব।’
চিত্রনায়িকা অঞ্জনা এরই ভেতরে শপথ নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার পুরনো কলিগ ইলিয়াস কাঞ্চন ডেকেছেন আমি শপথ নিয়েছি। কিন্তু আমার প্যানেলের যে কোনো সিদ্ধান্তই আমরা একসাথে নিবো।’
অন্যদিকে সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আমি নিয়মের মানুষ। নিয়মের বাইরে কোনো কিছুই করি না। আর যে বিবাদ হচ্ছে, সেটিও নিশ্চয়ই সমাধান হবে।’