Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:১৭ AM
আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:১৭ AM

bdmorning Image Preview
ছবি সংগৃহীত


খালেদা জিয়ার চিকিৎসাকে কেন্দ্র করে বিএনপির সার্বিক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণে রাখবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশে যেন কেউ ‘অস্থিতিশীল’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়েও সতর্ক থাকবে দলটি। শুক্রবার বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এ নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় রাজধানীসহ সারাদেশে আন্দোলন-কর্মসূচি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ বিষয়ে জেলা-উপজেলার নেতাদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া সোমবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানো তাদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ও দলীয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন শুক্রবার বলেন, কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকব। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকরা এ বিষয়ে সারা দেশের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রাখছেন।

দলটির একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ইস্যুটিকে বিএনপি রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা করছে বলে সভায় মত দেন একাধিক নেতা। তারা বলেন, বিএনপি আন্দোলনের জন্য একটি ইস্যু চাচ্ছে। খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়াকে প্রাধান্য দিলে বিএনপি আইনি পথে হাঁটত, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইত। তারা যেহেতু আন্দোলনের পথে হাঁটছে, আওয়ামী লীগকেও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্য জানান, বিএনপি নেতারা যেন এই ইস্যুতে কোনো ধরনের রাজনৈতিক অন্দোলনের প্রস্তুতি না নিতে পারে সেজন্য বিএনপি নেতাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার বিষয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত যেন তাদের রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধি করতে না পারে সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনপ্রিয় প্রার্থীদের মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে বক্তব্য দেন তিনজন নেতা। তাদের ভাষ্য, বেশ কিছু জায়গায় অজনপ্রিয় প্রার্থী মনোনয়ন পেয়েছে। ওইসব প্রার্থীকে বিজয়ী করতে গিয়ে দলকে নানা বদনামের ভাগিদার হতে হচ্ছে। আর তৃণমূলে আমাদের সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবা উচিত। একই সঙ্গে সভায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়েও আলোচনা হয়। নেতারা বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা নির্বাচন করছেন ও যারা তাদের মদদ দিচ্ছেন তাদের গঠনতন্ত্র অনুসারে প্রথম শোকজ এবং পরে বহিষ্কারের সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। কিন্তু অনেক জায়গায় স্থানীয়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে; যা তারা করতে পারেন না।

একটি সূত্র জানায়, সভায় শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়েও কথা হয়। বিআরটিসির মতো বেসরকারি বাস মালিকদেরও শিক্ষার্থীদের কাছে অর্ধেক ভাড়া নেওয়া উচিত বলে মত দেন নেতারা। বাস মালিকদেরকে অর্ধেক ভাড়া আদায়ের আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত হয় সভায়।

সম্পাদকমণ্ডলীর সভার আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের বিআরটিসি বাসে ৫০ শতাংশ ভাড়া নির্ধারণ করায় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় ধন্যবাদ জানানো হয়। এছাড়া বাস মালিক-শ্রমিকদের প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের অর্ধেক ভাড়া রাখার জন্য আহ্বান জানানো হয়।

সভায় ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এবং ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয়। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর জানান, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে অনেক কর্মসূচি থাকবে। ১৮ ডিসেম্বর দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন (ধানমন্ডি ৩২) পর্যন্ত র‌্যালি হবে এবং ১০ জানুয়ারি জাতির পিতার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি সাপেক্ষে এ কর্মসূচি চূড়ান্ত হবে।

Bootstrap Image Preview