Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

চাকরি চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ময়মনসিংহ মেডিক্যালের সাবেক পরিচালক!

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:২১ PM
আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:২১ PM

bdmorning Image Preview


ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন আহমেদ। ৪ বছর ৮ মাস দায়িত্ব পালনের পর এখন চলছে অবসর জীবন।

বছর খানেকের বেশি সময় হলো ফুরিয়েছে চাকরির মেয়াদ। এরপর করোনা মহামারির মধ্যে ঘর থেকে বের হওয়া হয়নি। দূরে আছেন ব্যস্ত জীবন থেকে। এর মধ্যেই হঠাৎ নিজের ফেসবুকে চাকরি চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

নাসির উদ্দীন রোববার এক পোস্টে লিখেছেনপ্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন শুভাকাঙ্ক্ষী। আজ ১ বছর ২ মাস ঘরে বসা। এলপিআর শেষ। সংসার ও নিজকে কর্মক্ষম রাখতে কিছু করা প্রয়োজন। নিজের ভবিষ্যৎ চিন্তা করিনি। হালাল ও হারামের সংমিশ্রনে এ জীবন।

মেডিকেল ও নন মেডিকেল যে কোন সেক্টরে কোন নিবেদিত ও সৎ ব্যক্তি হিসাবে বিবেচনায় নিয়ে কোন প্রতিষ্ঠান আমাকে বাংলাদেশের যে কোন স্থানে চাকুরির সুযোগ দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।

সরকারি চাকরি তো আমার এক বছর ২ মাস আগেই শেষ। সিভি অনেক জায়গায় দিয়েছি, কোথাও হয়নি। নির্দিষ্ট কোনো কারণ আমি জানি না, কেন হয়নি। অনেক জায়গায় আমার পছন্দ হয়নি। তাদের নীতি-নৈতিকতা বা করপোরেট কালচারের সঙ্গে আমি অ্যাডজাস্ট হতে পারব না, সেজন্য আমি জয়েন করিনি।

চাকরি চেয়ে ফেসবুকে দেয়া এই পোস্টে নিজের ফোন নম্বররও দিয়েছেন নাসির উদ্দিন আহমেদ।

এ বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মতো মানুষ ঘরে বসে থাকলে কি হয়? ঘরে বসে থাকলে বিভিন্ন রকমের দুশ্চিন্তা আসে। আর এক বছর ২ মাস কোভিডের কারণে লম্বা সময় ধরে বসে আছি। ন্যাচারালি আমার মানসিক অবস্থা তো কিছুটা খারাপ হচ্ছেই।

‘এজন্য বলছি, যে কোনো সেক্টরেই, মেডিক্যাল বা নন মেডিক্যাল সেক্টরে সম্মানজনকভাবে একটা চাকরি করতে পারব। কারণ মেয়ে দুজন আছেন। বিয়ে দিতে হবে। ডাক্তার মেয়ে। সংসার চালাতে হবে। সেজন্য চাকরি চাই।’

চাকরি না চেয়ে ব্যক্তিগত চেম্বার করেও তো চিকিৎসা সেবা দেয়া যায়, এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কবিরাজি করতে চাই না। আমি আজকে ৩৪ বছর রোগী দেখা থেকে দূরে। আমাকে এই জ্ঞানটা আহরণ করার জন্য দুইটা বছর সময় নিতে হবে। রোগীর উপকার করতে না পারি, ক্ষতি করতে চাই না। এ কারণে আমি চেম্বার করি না।’

এ ধরনের কোনো ইচ্ছে নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ওই ধরনের ইনকাম করতে চাইলে এক বছর আগেই তো বসে যেতে পারতাম।’

কেমন চাকরি প্রত্যাশা করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ধরেন আপনি আমাকে একটা প্রতিষ্ঠানে নিলেন, সেখানে একটা সময় থাকবে। প্রতিষ্ঠানের জন্য যতটুকু সময় ব্যয় করা সেটা আমি করব। তারা আমাকে কিছু আর্থিক রিমুন্যারেশন দেবে। অফিস যাওয়া আসার ট্রান্সপোর্ট দেবে, যেহেতু আমার বাসা ঢাকা করে ফেলেছি। ঢাকার আশেপাশে হলে আমার সুবিধা হবে। কারণ আমাকে পরিবারও দেখতে হবে।’

যে কোনো সুস্থ পরিবেশে, ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চান সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘আমার ডেজিগনেশন এমডি হলো, নাকি ডিরেক্টর হলো সেটা বড় প্রশ্ন না। সিম্পল একজন এক্সিকিউটিভ হিসেবেই কাজ করতে চাই। যেন তাদের প্রতিষ্ঠানে কোনো কল্যাণ যুক্ত করতে পারি।’

নিজেকে অবশ্য অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল দাবি করেছেন তিনি। বলেন, ‘আমি অর্থনৈতিকভাব স্বচ্ছল হয়েছি ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে যাওয়ার পর। কারণ সেখানে ব্লাড ব্যাংকের কিছু অনারিয়াম পেতাম, ট্রেনিংয়ের অনারিয়াম পেতাম, বিভিন্ন মিটিংয়ে গেলে অনারিয়াম পেতাম। এতে আমার আর্থিক অবস্থা অনেক ভালো হয়েছে। ডাল-ভাত খেয়ে চলতে পারব।’

তবে ঘরে বসে থাকাটা নিতে পারছেন না তিনি। নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি একা একটা হসপিটাল করে ফেলব, সেটা চালাব, সেই সামর্থ্য আমার নেই। এ কারণেই কাজ চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছি।’

Bootstrap Image Preview