আগামী দিন কাজে যোগ না দিলে চাকরি হারাতে হবে। প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে ঢাকায় যাবো। কথা হচ্ছিলো আলি আজম নামের পোশাক কারখানায় কর্মরত এক ব্যক্তির সাথে। তিনি বরিশালের বাসিন্দা। ঈদুল আজহার সময়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। ‘লকডাউনেও’ কারখানা খুলে দেওয়ার সিন্ধান্তে এখন ঢাকায় ফেরা নিয়ে আছেন বিপাকে।
পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ১ আগস্ট উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আগামিকাল থেকে খুলছে পোশাক কারখানা।কিন্তু দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় চাকরি বাঁচাতে যে যেভাবে পারছে সে সেভাবে ছুটছে কর্মস্থলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
শনিবার (৩১ জুলাই)সকালে বরিশাল নগরীর নথুল্লবাদ কেন্দ্রীয় বাস টর্মিনাল একাকায় গিয়ে দেখা যায়, লকডাউনে সব কার্যক্রম বন্ধ থাকা নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকায় রাজধানীমুখী পোশাক শ্রমিকদের উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় মোটরসাইকেল, বিভিন্ন ধরনের থ্রি-হুইলার ও পণ্যবাহীসহ নানান যানবহনে ঢাকায় যাচ্ছে তারা। কোনো ধরনের যানবাহন না পেয়ে কেউ কেউ হাঁটা শুরু করেছেন।
তবে যাত্রীবাহী কোনো যানবাহন না থাকায় রাজধানী পর্যন্ত এতো দূরের পথ কিভাবে তারা পৌঁছাবে, এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন অনেকে। একপর্যায়ে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে চলাচলরত পণ্যবাহী ট্রাক আটকে দেয় তারা। পরে খবর পেয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল স্বাভাবিক করে।
পোশাক শ্রমিকরা জানান, পোশাক কারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ১ আগস্ট উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এ কারণে বৃষ্টি আর লকডাউন উপেক্ষা করেই তাদের কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে।
তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পোশাক কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে যানবাহন চলাচলের বিষয়টি সুরাহা করা উচিৎ ছিলো। তা না করায় দেশে বিভিন্ন স্থানে থাকা লাখ লাখ পোশাক শ্রমিকরা বিপদের মধ্যে পড়েছে।
শফিউল ইসলাম নামের এক পোশাক শ্রমিক জানান, বাসসহ কোনো গণপরিবহন না থাকায় বিপাকে পড়েছি। যেকোন মূল্যেই ঢাকা যেতে হবে।
কাউসার হোসেন নামে অপর এক শ্রমিক বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলাতে লাখ লাখ শ্রমিক অসংখ্য ঈদুল আজহার সময়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। ‘লকডাউনেও’ কারখানা খুলে দেওয়ার সিন্ধান্তে সেই পোশাক শ্রমিকরাই পড়েছেন এখন বিপাকে।
এদিকে নথুল্লাবাদসহ নিজেদের আওতাধীন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপ্লব বড়ুয়া।