গাজীপুরে প্রথম পর্যায়ে কোনও রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই শুধুমাত্র জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে চারটি পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিকদের করোনা টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান।
রোববার (১৮ জুলাই) সকালে মহানগরের কোনাবাড়ি এলাকার তুসুকা ডেনিম লিমিটেডে করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে গাজীপুর মহানগরের তুসুকা ডেনিম, তুসুকা ট্রাউজার, স্প্যারো অ্যাপারেলস ও রোজভ্যালি নামে চারটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের (যাদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর) এই টিকা দেওয়া হবে।
গাজীপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) সুপার মো. আমজাদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, চারটি কারখানা থেকে শ্রমিকদের এনআইডি নম্বরের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। রবিবার সকালে ওইসব কারখানায় গিয়ে তালিকা মিলিয়ে শ্রমিকদের করোনার টিকা দেওয়া শুরু হবে।
এরমধ্যে তুসুকা ডেনিম ও তুসুকা ট্রাউজার কারখানায় ৬ হাজার ২০০ জনের, স্প্যারো পোশাক কারখানার ৪ হাজার এবং রোজভ্যালি কারখানার ২ হাজার ৭০০ শ্রমিকের তালিকা পাওয়া গেছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটির আহ্বায়ক এসএম তরিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানান, 'স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মতি নিয়ে রবিবার থেকেই গাজীপুরে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়। ঈদের আগে ১৯ জুলাই পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে। পরে পোশাক কারখানা ছাড়াও অন্যন্য কারখানার শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই টিকার আওতায় আনা হবে।'
তিনি বলেন, আমাদের টিকাদান কর্মসূচি মূলত হাসপাতালকেন্দ্রিক। কিন্তু আমরা পোশাকশ্রমিকদের জন্য গার্মেন্টসে গার্মেন্টসে গিয়ে টিকা দিচ্ছি। এ কাজটি করতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমাদের টিমকে প্রশিক্ষিত করেছি, ভ্যাক্সিনেটরদের প্রশিক্ষিত করেছি। আমাদের সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
আমরা গার্মেন্টস কর্মী সব ভাই-বোনকে টিকার আওতায় আনব। এরই অংশ হিসেবে আজ চারটি গার্মেন্টসে টিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছি। আজ (বোরবার) ১২ হাজার টিকা দেওয়ার চেষ্টা করব। যতক্ষণ এটা শেষ না হয় ততক্ষণ চলবে। আগামীকাল ৮টা গার্মেন্টসের শ্রমিকদের টিকা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করার ইচ্ছা আছে। পর্যাক্রমে সমস্ত গার্মেন্টসকে টিকাদানের আওতায় আনা হবে। দেশে প্রচুর টিকা আছে। তারই অংশ হিসেবে আমাদের এ কার্যক্রম চলবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুর ইসলাম, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (উত্তর) মো. জাকির হাসান, মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের হেড অব কান্ট্রি স্বপ্ন ভোমিক ও কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রমেশ সিং, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রহমতুল্লাহ্, তুসুকা ডেনিম লিমিটেডের পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন, মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সারের সিনিয়র সোশ্যাল কমপ্লিয়েন্স ম্যানেজার মিজানুর রহমান, কেয়ার বাংলাদেশের ডিরেক্টর হেলথ প্রোগ্রামার ডা. ইখতিয়ার উদ্দিন খন্দকার এবং হেড অফ আরবান হেলথ ডা. মো. জহিরুল আলম আজাদ।
করােনাভাইরাসে গাজীপুর জেলায় এখন পর্যন্ত ২৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে আর আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৩৯৩ জন।