দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ২৩৬ জন করোনা রোগী। মৃত্যুর সংখ্যা একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ও মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।
২৪ ঘণ্টায় মৃত ২২৬ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪০ ও নারী ৮৬ জন। তাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ১৬৮ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩৮ জন এবং বাড়িতে ২০ জন মারা যান।
একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ১২ হাজার ২৩৬ জন। এ নিয়ে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৭১ হাজার ৭৭৪ জনে।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বুধবার (১৪ জুলাই) ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ২১০ জনের মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। একই সময়ে নতুন ১২ হাজার ৩৮৩ জন রোগী শনাক্ত হয়।
গত রোববার (১১ জুলাই) রেকর্ড ২৩০ জনের মৃত্যু হয়। এটিই এখন পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এছাড়া মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) ২০৩ জন এবং সোমবার (১২ জুলাই) ২২০ জন মারা যান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি ৬২৭টি ল্যাবরেটরিতে ৪৬ হাজার ৬০৪টি নমুনা সংগ্রহ ও ৪৪ হাজার ৯৪১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৭১ লাখ ৪৪ হাজার ৭২০টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত শনাক্তের মোট হার ১৫ শতাংশ।
এদিকে, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন আট হাজার ৩৯৫ জন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা নয় লাখ পাঁচ হাজার ৮০৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৫১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ২২৬ জনের মধ্যে বয়সের হিসাবে দশোর্ধ্ব একজন, বিশোর্ধ্ব ছয়জন, ত্রিশোর্ধ্ব ১২ জন, চল্লিশোর্ধ্ব ৩৬ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৪৯ জন, ষাটোর্ধ্ব ৫০ জন, সত্তরোর্ধ্ব ৪৪ জন, আশির্ধ্ব ২২ জন, নব্বইয়ের বেশি বয়সী তিনজন এবং শতবর্ষের বেশি বয়সী দুইজন রয়েছেন।
বিভাগওয়ারী হিসাবে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে ৭৪ জন, চট্টগ্রামে ৪২ জন, রাজশাহীতে ২৪ জন, খুলনায় ৫২ জন, বরিশালে ছয়জন, সিলেটে পাঁচজন, রংপুরে ১৩ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন রয়েছেন।
এছাড়া, ১১-২০ বছরের মধ্যে একজন, ২১-৩০ বছরের মধ্যে ছয় জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ১২ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৩৬ জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৪৯ জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ৫০ জন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে ৪৪ জন, ৮১-৯০ বছরের মধ্যে ২২ জন ও ৯১-১০০ বছরের মধ্যে তিন জন মারা গেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এরপর খুলনা বিভাগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিলেট বিভাগে এ সময়ে সবচেয়ে কম পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪২ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ১৩ জন, বরিশাল বিভাগে ছয় জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ১০ জন মারা গেছেন।
২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ২৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া, চট্টগ্রাম বিভাগে দুই হাজার ৪৭ জন, খুলনা বিভাগে এক হাজার ৬৩৯ জন, রাজশাহী বিভাগে এক হাজার ২৬৯ জন, রংপুর বিভাগে ৫১১ জন, বরিশাল বিভাগে ৫০০ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৯৮ জন ও সিলেট বিভাগে ৫৩৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
একই সময়ে দেশে সুস্থ হয়েছেন আট হাজার ৩৯৫ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন নয় লাখ পাঁচ হাজার ৮০৭ জন।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন পর্যন্ত মোট পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৫ শতাংশ। মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৫১ শতাংশ ও মৃত্যুর হার এক দশমিক ৬১ শতাংশ।
বাংলাদেশে করোনা প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর ভাইরাসটিতে একজনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদফতর।