Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৪ শনিবার, মে ২০২৪ | ২১ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

বানর ধরতে গিয়ে বঙ্গভ্যাক্সের কর্মীরা কেন লাঞ্চিত?

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২১, ০৩:১৪ PM
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২১, ০৩:১৪ PM

bdmorning Image Preview


করোনা প্রতিরোধে গাজীপুরের শ্রীপুরে বঙ্গভ্যাক্সের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য বানর ধরতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারী। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া বানর ধরেন। এ কারণে তাদের বাধা দেয়া হয়।

গত ২৯ জুন থেকে তিন দিনে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ও সাফারি পার্ক থেকে ৩০টি বানর সংগ্রহ করেছেন তারা (গ্লোব বায়োটেক) । বাকি বানর ধরার জন্য রোববার সকালে স্থানীয় প্রশাসন ও বন কর্মকর্তাদের অবগত না করেই শ্রীপুরের বরমী বাজারে গেলে স্থানীয়রা তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হন।

রোববার সকালে শ্রীপুরের বরমী বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন।

গ্লোব বায়োটেকের মিডিয়া কনসালটেন্ট আনিছুর রহমান জানান, করোনা ভ্যাকসিন মানবদেহে প্রয়োগের আগে প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করতে হয় কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য। প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তিনিসহ পাঁচজন শ্রীপুরে বানর ধরতে গিয়েছিলেন।

আনিছুর অভিযোগ করেন, বরমী বাজার এলাকা থেকে ১০টি বানর ধরেন তারা। কিন্তু স্থানীয়রা বানরের বিনিময়ে টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় স্থানীয়রা তাদের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সাসহ বানরগুলোও ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয়দের নিষেধ না মেনে পাঁচজন ওই দলটি খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে ১৪টি বানর ধরে। কিন্তু তাদের সঙ্গে প্রশাসনের কোনো প্রতিনিধি না থাকায় এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে তাদের বরমী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

বরমী বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আবুল হাশেম বলেন, বানর ধরতে আসা লোকদের কেউ লাঞ্ছিত বা তাদের কাছ থেকে কেউ কিছু ছিনিয়ে নেয়নি। এসব মিথ্যা অভিযোগ। বরং নিয়ম না মেনে স্থানীয় প্রশাসনকে না জানিয়ে তারা বরমীর ঐতিহ্যের সাক্ষ্মী বানর ধরতে এসেছিলেন।

তিনি বলেন, শ শ বছর ধরে বরমী বাজারের বাসিন্দারা বানরের নানা অত্যাচার সহ্য করে উল্টো যত্ন-আত্তি করে আসছে। শাটডাউনে দোকানপাট বন্ধ থাকার পরও বানরগুলোকে বরমী বাজারবাসী অভুক্ত রাখেনি। এ বানরগুলো বরমী বাজারের ইতিহাসের অংশ। বানরগুলোকে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে খাঁচায় বন্দি করা হয়, এমনকি অজ্ঞানও করা হয়। এ কারণে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হন।

এ বিষয়ে, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বনসংরক্ষক তবিবুর রহমান জানান, গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের বঙ্গভ্যাক্স টিকার ট্রায়ালের জন্য বানরের দেহে প্রয়োগের নির্দেশনা বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ থেকে দেয়া হয়। এজন্য ৫৬টি বানর প্রয়োজন জানিয়ে গত ২৬ জুন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তাদেরকে বানর ধরার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

তবিবুর আরও জানান, তারা (গ্লোব বায়োটেক) গত ২৯ জুন থেকে তিন দিনে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ও সাফারি পার্ক থেকে ৩০টি বানর সংগ্রহ করেছেন। বাকি বানর ধরার জন্য রোববার সকালে স্থানীয় প্রশাসন ও বন কর্মকর্তাদের অবগত না করেই শ্রীপুরের বরমী বাজারে গেলে স্থানীয়রা তাদের প্রতি ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনায় পুলিশ তাদের উদ্ধার করে। শেষ পর্যন্ত তারা বানরগুলো নিয়ে যেতে পারেনি।

শ্রীপুর থানার ওসি খোন্দকার ইমাম জানান, স্থানীয় জনতা তাদেরকে আটকে রেখে বানরগুলো ছাড়িয়ে নেয়। এর মধ্যে অজ্ঞান করা দুটি বানর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে সেগুলোকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের ক্ষুব্ধ জনতার কাছ থেকে ছাড়িয়ে থানায় নেয়া হয়। পরে তাদের কাছে থাকা বন মন্ত্রণালয় ও বন বিভাগের অনাপত্তিপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই করে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে রাতেই।

Bootstrap Image Preview