Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৩ শুক্রবার, মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

দুই সপ্তাহের জন্য ভারতের সাথে সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০৫:০৪ PM
আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২১, ০৫:০৪ PM

bdmorning Image Preview


প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেওয়ায় দেশটির সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।আগামীকাল সোমবার থেকে আপাতত দুই সপ্তাহের জন্য ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করা হচ্ছে।

রোববার সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এর আগে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত আপাতত বন্ধ রাখার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা। 

রোববার বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আয়োজিত এক আলোচনা সভার পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, আর কোনো বিপর্যয় এড়াতে এখন ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ রাখার উচিত। এ বিষয়ে আমাদের মতামত আমরা যথাযথ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। যদিও সরকারের ওপরের মহল থেকেই এ সিদ্ধান্ত আসবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে ভারতের ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি আছে কিনা এমন কোনো নিশ্চিত খবর আমাদের কাছে নেই। তবে দেশে নাইজেরিয়ার ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ার কথা গণমাধ্যমেই জেনেছি। 

তিনি আরও  জানান,  মে মাসের প্রথম সপ্তাহে করোনাভাইরাসের প্রায় ২১ লাখ টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশ।

এদিকে রোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বাংলাদেশে প্রবেশ করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট চারদিকে ৩০০ গুণ সংক্রমণ ছড়ানোর ক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও লাইন ডিরেক্টর (অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন। এজন্য দেশের জনগণকে সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধানসহ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র বলেন, ভারতে অসম্ভব রকমের করোনার সংক্রমণ ঘটছে। প্রতিবেশী দেশটিতে যে দুটি ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে- ডাবল বা ত্রিপল মিউটেশন ভাইরাস, তা সারাবিশ্বে বিস্ময় হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই ডাবল কিংবা ত্রিপল মিউটেশন ভাইরাস যেন কোনোভাবেই দেশে আসতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, আগামী ২৮ এপ্রিল সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’ শেষ হবে। আজ থেকে সীমিত পরিসরে দোকানপাট ও শপিংমল খুলে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জনগণের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। দীর্ঘস্থায়ী লকডাউন পরিপূর্ণ সমাধান নয় এবং এর ফলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

জনগণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে জানিয়ে এ বিশেষজ্ঞ বলেন, জনগণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মুখে সার্বক্ষণিক মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর হয়ে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করতে হবে।

সম্প্রতি ভারতের জিনোম বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের যে ‘ডাবল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্ট’ চিহ্নিত করেছেন, সেটি নিয়ে উদ্বেগ আছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই ডাবল মিউটেশনের কারণে ভাইরাসটি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ফাঁকি দিতে পারে। টিকা তখন কাজ করে না। আর ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়্যান্ট’ এর কথা। ইতোমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির বেশ কয়েকটি রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে।

নতুন এই স্ট্রেইনে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থারও দ্রুত অবনতি ঘটছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল জানান, বাংলাদেশের বিশাল সীমান্ত ভারতের সাথে। তাই আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ যতই বন্ধ থাকুক - তাতে সেখানকার ভাইরাস আসবে না এই নিশ্চয়তা নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো লাগাম পরানো না গেলে এবার সংক্রমণের সুনামি ঘটবে।

Bootstrap Image Preview