Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০৮ বুধবার, মে ২০২৪ | ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

প্রাণ ভিক্ষা চান তিন পুলিশ সদস্য

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:৩৪ PM
আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, ০৪:৩৪ PM

bdmorning Image Preview
সংগৃহীত


সোমবার রাতে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাম্পুর এলাকায় পালিয়ে যাওয়া প্রেমিক যুগলকে আটক করতে গিয়ে ব্যাপক গণপিটুনির শিকার হয়েছেন দেবিদ্বার থানার তিন পুলিশ সদস্য। 

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের বিহারমন্ডল গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে ও মোহনপুর পাবলিক কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী আঁখি আক্তারের সাথে প্রতিবেশী সামসুল হকের ছেলে মো. ইউছুফের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এক মাস আগে তারা পালিয়ে বিয়ে করে। পরে পরিবারের মেনে নেওয়ার আশ্বাসে বিয়ের ১০ দিন পর তারা আবার বাড়িতে ফিরে আসে, বলে জানা গেছে। 

কিন্তু সেই আশ্বাস ভঙ্গ করে গত ২৩ ডিসেম্বর আঁখিকে পাশ্ববর্তী এলাহাবাদ ইউনিয়নের সিঙ্গারী খোলা গ্রামে বিয়ে দেয় তার পরিবার। 

বিয়ের দু’দিন পর রবিবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নতুন স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আসে আঁখি এবং তাকে রেখেই আগের প্রেমিক ও স্বামী ইউছুফকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

ওই ঘটনায় পরদিন সোমবার আঁখির নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় একটি অপহরণের অভিযোগ করেন।

এদিকে, অপহরণের তদন্তে পুলিশ ইউছুফের বাড়িতে গিয়ে তাকে না পেয়ে বড় ভাই ইব্রাহিমকে দেবিদ্বা থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ জানায়, ইউছুফ ফিরে না আসলে ইব্রাহিমকে জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

খবর পেয়ে ইউছুফ আঁখিকে নিয়ে বুড়িচং উপজেলার রাম্পুর এলাকা থেকে দেবিদ্বার থানায় যেতে চাইলে আঁখি তাতে অস্বীকৃতি জানায়। এ সময় উভয়ের বাকবিতণ্ডায় স্থানীয়রা দু’জনকেই আটক করে। খবর পেয়ে দেবিদ্বার থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইকরামুল হক দু’জন সিপাহী সিভিল পোষাকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউছুফকে করে। 

এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পুলিশ ইউছুফের পেটে লাথি দিলে সে লুটিয়ে পড়ে এবং অচেতন হয়ে যায়। এ নিয়ে স্থানীয়রা পুলিশের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারপিট করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার একপর্যায়ে প্রাণ ভিক্ষা চায় পুলিশ সদস্যরা। পরে আব্দুল গফুর নামে স্থানীয় এক যুবক তিন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে একটি ঘরে আটকে রাখে এবং জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) ফোন করে।  

খবর পেয়ে দেবিদ্বার ও বুড়িচং থানার দুই ওসিসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং আহত তিন পুলিশসহ প্রেমিকযুগলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। 

দেবীদ্বার থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক ইকরামুল হক বলেন, “ঘটনাস্থলে দু’টি গ্রুপ সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।”

“আমাদের অবহিত না করে আমাদের থানা এলাকা থেকে আসামি ধরতে আসলেও, যেহেতু অভিযোগটি দেবিদ্বার থানার সেহেতু এই ঘটনায় ওই থানায় মামলা হতে বাধা নেই।”  বলেন বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক। 

দেবীদ্বার ও ব্রাক্ষণপাড়া থানার সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আমিরুল্লাহ পুলিশের এমন আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। 

“কিছু পুলিশ মানুষের সাথে আচরণের শিক্ষাটাও নেননি। তাদের কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে শৃংখলা বিরোধী কাজ করার অপরাধে দেবিদ্বার থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক ইকরামুল হকসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যাবস্থা নেওয়া হবে," বলেন তিনি। 

Bootstrap Image Preview