Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ০২ বৃহস্পতিবার, মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

ভ্যানচালক শম্পার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:৫৭ PM
আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০৯:৫৭ PM

bdmorning Image Preview
ছবিঃ সংগৃহীত


বিডিমর্নিং ডেস্কঃ বাবার ওষুধের টাকা জোগাড় করতে ভ্যান চালানো শুরু করেন চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী শম্পা। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সেটি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। জামালপুরের সেই ভ্যানচালক শম্পার পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শম্পার বাবা শরিফুল ইসলামের চিকিৎসার খরচ বহন, নতুন ঘর নির্মাণ, শম্পার লেখাপড়ার খরচ ও তাদের নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব শোনার পর শম্পার পরিবারের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি, বুকে ফিরেছে আশার আলো। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর শম্পার পরিবারে সুখের দৃশ্য দেখতে তাদের বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী।

আজ বুধবার (২ ডিসেম্বর) শুরু হয়েছে শম্পার পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর নির্মাণের কাজ। জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক এই ঘর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। এ সময় জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াছমিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

নির্মাণ কাজ উদ্বোধনের পর উন্নত চিকিৎসার জন্য শরিফুল ইসলামকে রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়। পাঁচ বছর আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় ডান পা ভেঙ্গে যায় শম্পার বাবা শরিফুলের। প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে সাত লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসার পরেও ভালো হয়নি শরিফুল ইসলামের ডান পা। এরপর থেকেই সবসময় বিছানায় থাকতে হয় শরিফুল ইসলামকে। সবজি বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেন শম্পার মা নেবুজা বেগম। সেই উপার্জনেও যখন সংসার চলে না তখন বাবার ওষুধ টাকা সংগ্রহ করার জন্য দেড় বছর আগে ভ্যান চালানো শুরু করে শম্পা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে শম্পার পরিবারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি বিষয়টি জেলা প্রশাসককে তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. এনামুল হক নাকাটি গ্রামের সড়ক দুর্ঘটনায় পঙ্গু শরিফুল ইসলাম ভাসানীর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার একটি রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানোর পর শম্পার পরিবারের সকল দায়িত্ব গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শম্পার বাবা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আঙ্গরে খুব কষ্টে দিন যাইতো। খায়ে, না খায়ে থাকতাম। মেয়েঠা আমার ভ্যান চালাইতো। এইডে দেখতেউ খারাপ লাগতো। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঙ্গরে দায়িত্ব নিছে। আমরা খুব খুশি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আল্লাহর কাছে দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে বহুতদিন বাইচে থাকে। ’

শম্পার মা নেবুজা বেগম বলেন, ‘মেয়েঠা আমার ভ্যান নিয়ে গেলেই চিন্তের মদ্যে থাকতাম সারাঠা দিন। এই এতটুক মেয়ে ভ্যান চালাইতো। কি যে কষ্ট করতো মেয়েঠা আমার। আস্তে আস্তে মেয়েঠাও আমার দুর্বল হয়ে যাইতাছিলো। প্রধানমন্ত্রী আঙ্গরে নয়া ঘর দিতাছে, মেয়েঠা পড়ার খরচ দিবো। আঙ্গরে দায়িত্ব নিছে। আমরা কি কয়ে প্রধানমন্ত্রীরে ধন্যবাদ দিমু বুঝতাছি না। খালি আল্লাহর কাছে দোয়া করি যে প্রধানমন্ত্রী যাতে সবসময় বালা থাকে, সুস্থ থাকে।’

শম্পা বলে, ‘আমি আমার বাপের জন্য অনেক কষ্ট করছি। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার বাপের চিকিৎসার দায়িত্ব নিছে। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা সারাজীবন তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো।’

Bootstrap Image Preview