দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চরেছে। আক্রান্তদের সিংহভাগই স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশের মতো সম্মুখযোদ্ধা। সারাদেশে ৮৫৪ জন পুলিশের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
শনিবার এই সংখ্যাটি ছিলো সাড়ে সাতশোর কাছাকাছি। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানে নতুন করে শতাধিক পুলিশ সদস্য করোনা পজিটিভ হয়েছেন। শুধু ঢাকা শহরে কর্মরত প্রায় সাড়ে ৪শ' পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে ১২৫০ জন এবং আইসোলেশনে আছেন ৩১৫ জন। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫৭ জন। আর মারা গেছেন পাঁচজন।
কেন এত বেশি সংখ্যায় করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা?
লকডাউনের মতো কড়াকড়ি আরোপে গুরুত্বপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনীর মতো পুলিশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অনেকসময়ই পুলিশ নিজেদের সুরক্ষার চেয়ে জনগণের সুরক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়ার কারণে পুলিশের এত বেশি সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন বলে মনে করছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি মিডিয়া সোহেল রানা বলেন, দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অনেকসময়ই পুলিশ নিজেদের সুরক্ষার চেয়ে জনগণের সুরক্ষার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়ার কারণে পুলিশের এত বেশি সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনি বলেন, পুলিশের ডিউটির ধরণটাই এরকম যে মানুষের সংস্পর্শে না এসে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয় না।
তার কথায় পুলিশ যখন কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশন বাস্তবায়ন করতে বাড়ি বাড়ি গেছে, অনেক জায়গায় মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জরুরি ত্রাণ ও খাবার পৌঁছে দিয়েছে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রশাসনের সাথে বাজার নিয়ন্ত্রণ অভিযানে গেছে- তখন মানুষের সংস্পর্শে আসতে বাধ্য হয়েছে তারা।
দেশের কোথাও কোথাও সন্দেহভাজন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীকে তার স্বজনরা পর্যন্ত পরিত্যাগ করেছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া অনেকের লাশও নিতে অস্বীকার করেছে কোনো কোনো রোগীর স্বজনরা।
সোহেল রানা বলেন, কিছু জায়গায় করোনাভাইরাস রোগীকে পরিত্যাগ করার ঘটনা ঘটেছে, আবার কোথাও দেখা গেছে যে রোগী নিজেই পালিয়েছে। আবার এমন ঘটনাও ঘটেছে যে মরদেহ সৎকারে কেউে এগিয়ে আসেনি। এরকম প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাহায্য করেছে পুলিশই।
কিছু সীমাবদ্ধতা থাকলেও পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিতে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।