মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে তুর্কি সেনাদের ওপর সরকারি বাহিনীর হামলার পর শক্ত হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান।
তিনি বলেছেন, অঞ্চলটিতে আমাদের সেনাদের ওপর হামলার জন্য সিরীয় সরকারকে চড়া মূল্য দিতে হবে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজ জানিয়েছে, গত সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত প্রদেশ ইদলিবে সরকারি সেনাদের অভিযানে পাঁচ তুর্কি সেনার প্রাণহানি ঘটে। মূলত সেই হামলার জবাবে সিরিয়ার শতাধিক স্থাপনায় পাল্টা আক্রমণ চালায় তুরস্ক। এরদোগান দাবি করেছেন, আমাদের পাল্টা হামলা আগামীতেও চলবে।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-মাজদার নিউজ জানায়, মঙ্গলবার ইদলিবে একে-অপরের অবস্থান লক্ষ্য করে ভারী মর্টার শেল নিক্ষেপ করছে সিরিয়া ও তুরস্কের সামরিক বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ দিন সিরিয়ার একটি সামরিক হেলিকপ্টারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তুরস্ক। ফলে সেটি বিধ্বস্ত হয়। এসব ঘটনার পর তুরস্ক ও সিরিয়ার মধ্যে উত্তেজনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আঙ্কারার দাবি, এবার তাদের পাল্টা আক্রমণে সিরীয় সেনাবাহিনীকে বিধ্বস্ত করা হবে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) তুর্কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল ওলকাজি ডেনিজের বলেছিলেন, সিরীয় সেনাদের যে কোনো হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। ইদলিবে আমাদের সেনাদের আরও বড় অবস্থান থাকবে এবং তারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবেন।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রুশ সমর্থিত সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নির্দেশে সম্প্রতি বিদ্রোহীদের সর্বশেষ ঘাঁটি ইদলিবে জোরালো সেনা অভিযান শুরু হয়। আর এতেই নতুন করে শরণার্থীদের ঢল নামার আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট এরদোগান সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা ও সাঁজোয়া যান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন।
গত ৩১ জানুয়ারি তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, অবিলম্বে ইদলিবে যুদ্ধবিরতি দেওয়া না হলে তুরস্কের সামরিক বাহিনী সেখানে ভয়াবহ অভিযান শুরু করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার মানুষ ইদলিব ছেড়ে পালিয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। বর্তমানে তুরস্কে আশ্রিত অবস্থায় আছে আরও ৩৫ লাখের অধিক সিরিয়ান শরণার্থী। যদিও উত্তেজনার কারণে নতুন করে শরণার্থীদের ঢলের আশঙ্কায় রয়েছে পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটি।