মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এই ঘোষণা দেন। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গজারিয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের উপস্থিতিতে শপথ পাঠ করিয়ে গজারিয়াকে বাল্য বিয়েমুক্ত ঘোষণা করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে লন্ডন গার্লস সামিটে ঘোষণা দিয়েছিলেন ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছর বয়সের নিচে বাল্য বিয়ে শুন্যে ও ২০৪১ সালের মধ্যে বাল্য বিয়ে পুরোপুরি বন্ধ করা হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্যানিটারি প্যাড বিতরণ করেন ও পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাড বিতরণের কর্মসূচির ঘোষণা দেন। একই অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী গজারিয়ার কৃতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে গজারিয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান সাদীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরম্নন নাহার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরম্নন নেসা, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা ইয়াসমিন, জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশফাক হোসেন প্রমুখ।
গজারিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এমপি। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তানী বাহিনীর গুলিতে শহিদ ১২ জন শহিদ মুক্তিযোদ্ধোর স্মৃতির সংরক্ষণে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেন, ‘গজারিয়া ঢাকার কাছে অবস্থিত হওয়ায় মুক্তি যোদ্ধাদের নিকট সংবাদ ছিল পাক হানাদার বাহিনী যেকোন সময় গজারিয়া ও নিকটবর্তী বাউসিয়া এলাকায় আক্রমণ করতে পারে। সেই সময় শহিদ মতিউর রহমান জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মুক্তি বাহিনী ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভবেরচরে ঈদগাহ ব্রিজ উড়িয়ে দিতে গেলে পাক- হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে ১২ জন মুক্তি যোদ্ধা শহিদ হন।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন,‘গজারিয়া উপজেলায় হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা ১৯৭১ এর ৯ মে ইতিহাসের অন্যতম জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে গজারিয়া উপজেলার ১০ গ্রামের ৩শ’ ৬০ নিরীহ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে।’
সরকার সকল মুক্তি যোদ্ধাদের কবর ও গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক মনিরম্নজ্জামান তালুকদারে সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুন নেসা, অতিরিক্ত সচিব ফরিদা পারভিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক পরিচালক হাফিজ আহমদ, মুন্সীগঞ্জ সদর সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশফাকুজ্জামান, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসান সাদী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এসময় গজারিয়ায় শহিদ মতিউর রহমান জাহাঙ্গীর স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করা হয়।