Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ১৯ রবিবার, মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

সুরা নাসের তাফসির

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:১২ AM
আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১০:১২ AM

bdmorning Image Preview


আল্লাহ তায়ালা বলেন,

বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের রবের, মানুষের মাবুদের—তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্মগোপন করে, যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে। [সুরা নাস]

ব্যাখ্যা

উপরোক্ত আয়াতসমূহে মহান আল্লাহর রুবুবিয়্যাত, মুলকিয়্যাত ও উলুহিয়্যাত তথা সর্বময় কর্তৃত্ব, রাজত্ব ও ইবাদত পাওয়ার একমাত্র উপযুক্ততা প্রমাণিত হয়েছে। তিনিই সবকিছুর রব, মালিক ও মাবুদ। সবকিছুই তাঁর সৃষ্টি, সবকিছুই তার কর্তৃত্বের অধীন।

এ কারণে আল্লাহ তায়ালা আদেশ করছেন, তাঁর উপরোক্ত গুণাবলির মাধ্যমে তাঁর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে। যেহেতু আল্লাহ ছাড়া কোনো আশ্রয় দানকারী নেই, উদ্ধারকারী নেই, সুতরাং বিপদাপদে, ভয় ও শঙ্কায় কেবল আল্লাহর কাছেই সাহায্য ও আশ্রয় চাওয়া উচিত।

‘আর আল্লাহ যদি তোমার উপর কষ্টকর কিছু আরোপ করেন তাহলে কেউ নেই তা খন্ডাবার, তাঁকে ছাড়া। পক্ষান্তরে যদি তিনি কিছু কল্যাণ দান করেন, তবে তার মেহেরবানিকে রহিত করার মতও কেউ নেই। তিনি যার প্রতি অনুগ্রহ দান করতে চান স্বীয় বান্দাদের মধ্যে তাকেই দান করেন; বস্তুত; তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু।’ [সুরা ইউনুস, ১০ : ১০৭]

‘যদি শয়তানের পক্ষ থেকে আপনি কোনো কুমন্ত্রণা অনুভব করেন, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।’ [সুরা ফুসসিলাত, ৪১ : ৩৬]

বলুন, ‘হে আমার রব! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি এবং হে আমার রব! আমার নিকট তাদের উপস্থিতি থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি।’ [সুরা মুমিনুন, ২৩ : ৯৭-৯৮]

এটাকে পরিভাষায় ‘ইস্তিয়াযাহ’ বলা হয়। ইস্তিয়াযাহ ইবাদতের একটি দিক, যা কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট। এক্ষেত্রে অংশীদার স্থাপন করা শিরক। মহান আল্লাহ বলেন,

‘অনেক মানুষ জিনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জিনদের আত্মম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।’ [সুরা জিন, ৭২ : ৬]

তাই আশ্রয় চাইতে হবে একমাত্র আল্লাহর কাছে। বিপদাপদে কিংবা ভয়-শঙ্কায় তাঁর কাছেই কায়মনোবাক্যে ফরিয়াদ জানাতে হবে। আর বিশেষ করে কুরআন তিলাওয়াতের শুরুতে বিতাড়িত শয়তান থেকে তাঁর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি নিজেই আদেশ দিয়েছেন—

 ‘অতএব, যখন আপনি কুরআন পাঠ করেন তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ করুন।’ [সুরা নাহল, ১৬ : ৯৮]

শয়তানের প্রকারভেদ

শয়তান দু’প্রকার। মানুষ শয়তান ও জিন শয়তান। মূলত মানুষ শয়তান জিন শয়তানের হয়ে কার্যসম্পাদন করে। কখনও মানুষ শয়তান জিন শয়তানকে বশ করে কার্যসিদ্ধি করে থাকে। উভয়ে একে অপরের সহযোগী। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,

‘এমনিভাবে আমি প্রত্যেক নবির জন্যে শত্রু বানিয়েছি শয়তান মানব ও জিনকে। তারা ধোঁকা দেয়ার জন্যে একে অপরকে কারুকার্যখচিত কথাবার্তা শিক্ষা দেয়।’ [সুরা আনয়াম, ৬ : ১১২]

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মানুষ এবং জিন শয়তানের ক্ষতি থেকে হেফাজত করুন।

Bootstrap Image Preview