Bootstrap Image Preview
ঢাকা, ৩০ মঙ্গলবার, এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ | ঢাকা, ২৫ °সে

জাতীয় সম্মেলনে নেতা-কর্মীদের কঠোর বার্তা দিবেন শেখ হাসিনা

বিডিমর্নিং ডেস্ক
প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৪২ PM
আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:৪২ PM

bdmorning Image Preview


আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে চান। এর জন্য আওয়ামী লীগের দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দরকার। আর দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকতে হলে দলটির নেতাকর্মীদের জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে হবে, ত্যাগের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করা ও দুর্নীতি থেকে দূরে থাকতে হবে। দলীয় কোন্দলের পথ পরিহার করে ঐক্যবদ্ধ থেকে আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করতে হবে। আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে এসব বিষয় তুলে ধরে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কঠোর বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি জনগণকে আওয়ামী লীগের পাশে থাকার আহ্বান জানাবেন।

আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো এমনটাই জানিয়েছে। তারা বলছে, চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের দমন, সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি, দলীয় নেতাকর্মীদের সৎ ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতির ধারায় থাকার নির্দেশনা থাকছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।

আজ শুক্রবার বিকেলে ও আগামীকাল সকালে তিনি আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতির প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সঙ্গে যুক্ত একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সম্মেলনে যে ভাষণ দেবেন তা বুধবার পুস্তিকা আকারে ছাপানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের আট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের নেতাদের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সভাপতির ভাষণটি জেলা, মহানগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সম্মেলনের আগেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভাষণসহ অন্য প্রকাশনাগুলো সংবলিত একটি ব্যাগ কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের হাতে দেয়া হবে।

প্রচার ও প্রকাশা উপকমিটির সূত্রগুলো জানায়, আওয়ামী লীগ সভাপতি তার ভাষণে জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নিবিড় সম্পর্কের কথা তুলে ধরবেন। জনগণের ভাষা ও চাহিদা যে শুধু আওয়ামী লীগই বুঝতে পারে এবং সে কারণেই মানুষ বারবার আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে সে বিষয়গুলোও থাকবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। জনগণের আস্থা ও ভরসার সংগঠন হলো আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের প্রতি এই সম্পর্ক ধরে রাখার তাগিদ দেবেন শেখ হাসিনা।

‘আমরা দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির পথে অনেকদূর এগিয়ে গেছি। আজকে আমরা আর্থ সামাজিকভাবে অনেক শক্তিশালী। আমাদের আত্মবিশ্বাস এখন অনন্য উচ্চতায়। ভবিষ্যতেও জনগণ আমাদের পাশে থাকবে।’ এমন মন্তব্য করে দলকে শক্তিশালী করে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং জনগণের পাশে থাকতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাবেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অগণিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে দলকে টিকিয়ে রেখেছেন। কাউন্সিলের মধ্য দিয়ে আগামী তিন বছরের জন্য এ দলটির যে নতুন নেতৃত্ব আসবে তারা বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ জানাবেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি শেখ হাসিনার আহ্বান থাকবে, ‘আমি জানি, আপনারা নিজের জীবনের চেয়েও দলকে বেশি ভালোবাসেন। দলের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে আপনারা প্রস্তুত আছেন। আপনাদের বলব, দলকে শক্তিশালী করুন, ঐক্যবদ্ধ থাকুন। জনগণের পাশে থাকুন।’

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এ দেশের মানুষ উন্নত, সমৃদ্ধ আধুনিক দেশের নাগরিক হওয়ার গৌরব অর্জন করবে, এই দেশ দারিদ্রশূন্য হবে। উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের গর্বিত নাগরিক হিসেবে জনগণ উন্নত ও আধুনিক জীবন পাবে। আওয়ামী লীগের হাত ধরেই ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ ও আধুনিক কল্যাণকর দেশ। ২০৭১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই স্বাধীনতার শতবার্ষিকী উদযাপন করব এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই শতবর্ষব্যাপী ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়ন হবে—এমন আশাবাদও জানাবেন শেখ হাসিনা।

সরকারের সুদীর্ঘ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কারিগর হলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এই দলের নেতাকর্মীদের হাত ধরেই ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এজন্য সৎ, যোগ্য, ত্যাগী ও নিষ্ঠাবান নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রাখা হবে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আরও নৈতিক, মানসিক ও কর্মগুণে শক্তিশালী হয়ে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানাবেন শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগ সভাপতি তার বক্তব্যে ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত নানা ঘটনাবলি তুলে ধরবেন। তিনি স্বাধীনতার আগে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন খাতের তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরবেন। স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের আন্দোলন-সংগ্রামের কথাও থাকছে ভাষণে। ২০০৭ সালে এক-এগারো পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তার দুই পুত্রের নানা অপকর্ম, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসসহ বিরোধী দলগুলোর নানা সমালোচনাও থাকছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে।

সরকারের টানা তিন মেয়াদে নানা দীর্ঘমেয়াদি মেগা প্রকল্পসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, ক্রীড়া, সামরিক, যোগাযোগ, তথ্য-প্রযুক্তি খাতের নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরবেন শেখ হাসিনা।

সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাসিনোসহ নানা অপকর্মের হোতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদাহরণ তুলে ধরে শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানাবেন। তিনি চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দেবেন।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বানও থাকবে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং এই দেশে কেউ সংখ্যালঘু নয় জানিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব থাকবে শেখ হাসিনার বক্তব্যে।

Bootstrap Image Preview